বিভিন্ন প্রকার অপরিমাত্রিক পরীক্ষা
অপরিমাত্রিক পরীক্ষা (Non-parametric tests) গাণিতিক বা পরিসংখ্যানগত পরীক্ষা যেখানে ডেটা থেকে কোনো নির্দিষ্ট গাণিতিক
ধারণা (যেমন, গড়, মান বিচ্যুতি)
সম্পর্কে পূর্ব অনুমান করা হয় না বা এ ধরনের অনুমান করা হয় না। এসব পরীক্ষায় ডেটার
অন্তর্নিহিত বিতরণ বা পারামিটার নিয়ে কোনো পূর্বধারণা তৈরি করা হয় না, ফলে এগুলো সাধারণত ছোট নমুনা বা অপর্যাপ্ত ডেটার ক্ষেত্রেও কার্যকর।
এখানে কিছু প্রখ্যাত অপরিমাত্রিক পরীক্ষা সম্পর্কে
আলোচনা করা হলো:
1. ম্যান-হুইটনি ইউ-টেস্ট (Mann-Whitney
U Test)
- ব্যবহার: দুইটি স্বাধীন গ্রুপের মধ্যে
সেন্ট্রাল টেনডেন্স (যেমন, গড় বা মিডিয়ান) তুলনা করতে
ব্যবহৃত হয়।
- লক্ষ্য: এটি পরীক্ষা করে যে দুটি স্বাধীন
গ্রুপের বিতরণ একে অপরের থেকে আলাদা কিনা।
- প্রয়োগ: এটি সাধারণত ব্যবহার করা হয় যখন ডেটা
নরমাল বিতরণের অনুসরণ না করে এবং নমুনার আকার ছোট থাকে।
2. উইলকক্সন সাইনড-র্যাঙ্ক টেস্ট (Wilcoxon
Signed-Rank Test)
- ব্যবহার: একক বা জোড়া নমুনার তুলনা করার জন্য
ব্যবহৃত হয়, যখন ডেটা পরিসংখ্যানগতভাবে পরিমাপ করা না
যায়।
- লক্ষ্য: এটি সাধারণত দুটি সম্পর্কিত বা জোড়া
নমুনার মধ্যে মিডিয়ান বা পার্থক্য পরীক্ষা করতে ব্যবহৃত হয়।
- প্রয়োগ: এটি প্যারামেট্রিক টেস্টের বিকল্প
হিসেবে ব্যবহৃত হয়, যেমন পেয়ারড t-টেস্ট।
3. ক্রাসকাল-ওয়ালিস হও (Kruskal-Wallis
H Test)
- ব্যবহার: তিনটি বা তার বেশি স্বাধীন গ্রুপের
মধ্যে পার্থক্য পরীক্ষা করতে ব্যবহৃত হয়।
- লক্ষ্য: এটি চেক করে যে তিনটি বা তার বেশি
গ্রুপের মধ্যে গণনা (মিডিয়ান) ভিন্ন কিনা। এটি অর্ডিনাল বা র্যাংকড ডেটার
জন্য ব্যবহার করা হয়।
- প্রয়োগ: এটি একাধিক গ্রুপের তুলনা করার জন্য
ব্যবহৃত হয় যখন ডেটার ভ্যারিয়েন্স বা বিতরণ সমান না থাকে।
4. ফ্রীডম্যান আনলাইনড র্যাংক টেস্ট (Friedman
Anova)
- ব্যবহার: একাধিক সম্পর্কিত (জোড়া) গ্রুপের
মধ্যে পার্থক্য পরীক্ষা করতে ব্যবহৃত হয়।
- লক্ষ্য: এটি প্যারামেট্রিক টেস্টের বিকল্প
হিসেবে কাজ করে, যেমন একাধিক পেয়ারড t-টেস্ট, যেখানে র্যাংকড ডেটার ব্যবহার হয়।
5. কাই-স্কোয়ার টেস্ট (Chi-Square
Test)
- ব্যবহার: এটি কেটাগরিকাল ডেটা (যেমন, সংখ্যা বা শ্রেণী) বিশ্লেষণ করতে ব্যবহৃত হয়।
- লক্ষ্য: এটি পরীক্ষা করে যে দুটি বা তার বেশি
শ্রেণীর মধ্যে কোনো সম্পর্ক রয়েছে কিনা।
- প্রয়োগ: এটি সাধারণত ব্যবহার করা হয় সন্নিবেশী
সম্পর্কের বা স্বাধীনতার পরীক্ষা করতে, যেমন, দুটি ভেরিয়েবলের মধ্যে সম্পর্কের জন্য।
6. সাইন পরীক্ষার টেস্ট (Sign Test)
- ব্যবহার: এক বা দুটি সম্পর্কিত নমুনার জন্য
ব্যবহৃত হয়, যেখানে ডেটার ভ্যালু র্যাংক করা হয় না।
- লক্ষ্য: সাইন টেস্ট মূলত এটি পরীক্ষা করে যে
একটি ডেটা সেটের মান নির্দিষ্ট একটি মানের উপরে বা নিচে রয়েছে কিনা।
7. স্টুডেন্ট's টেস্ট (Student’s
t-Test) এর অপরিমাত্রিক বিকল্প
- কিছু ক্ষেত্রে যখন ডেটা নরমাল বিতরণ অনুসরণ না করে, তখন
টেস্টের অপরিমাত্রিক বিকল্প ব্যবহার করা হয়। যেমন, উইলকক্সন
সাইনড-র্যাঙ্ক টেস্ট এবং মান-হুইটনি ইউ-টেস্ট ব্যবহৃত হতে পারে।
অপরিমাত্রিক পরীক্ষার
বৈশিষ্ট্য:
- নির্দিষ্ট বিতরণ না থাকা: এই
পরীক্ষাগুলি ডেটার গাণিতিক বিতরণ (যেমন, গড়, মান বিচ্যুতি) সম্পর্কে কোন পূর্বধারণা তৈরি করে না।
- ছোট নমুনা: ছোট নমুনার ক্ষেত্রে অপরিমাত্রিক
পরীক্ষা অধিক কার্যকরী হতে পারে।
- র্যাংকড ডেটা: অপরিমাত্রিক পরীক্ষাগুলিতে
র্যাংকড ডেটা ব্যবহৃত হয়, তাই পরিমাপের শূন্যতা এবং
আংশিক পরিসংখ্যানগত অস্থিরতা কমানো যায়।
- এটি গড়ের পরিবর্তে মিডিয়ান ব্যবহার করে: যেহেতু
ডেটা নরমাল বিতরণের জন্য উপযুক্ত নয়, তাই গড়ের বদলে
মিডিয়ান বা র্যাংকড ভ্যালু ব্যবহার করা হয়।
অপরিমাত্রিক পরীক্ষা গুলি বিশেষ করে সেইসব
ক্ষেত্রে উপকারী যেখানে ডেটা তাত্ত্বিক বিতরণ অনুসরণ করে না বা পরিমাপের জন্য
আংশিক বা অসম্পূর্ণ তথ্য থাকে।
ঘোষণা: এই ওয়েবসাইটে (Bangla Articles) প্রকাশিত সকল লেখনি লেখক ও ওয়েব এডমিন মুহাম্মাদ আল-আমিন খান কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। Bangla Articles এর কোনো লেখনি থেকে সম্পূর্ণ অথবা আংশিক কপি করে সোশ্যাল মিডিয়া ও অন্য কোনো ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা যাবে না। কোনো লেখনি ভালো লাগলে ও প্রয়োজনীয় মনে হলে এই ওয়েবসাইট থেকেই তা পড়তে পারেন অথবা ওয়েব লিংক শেয়ার করতে পারেন। গুগল সার্চ থেকে দেখা গেছে যে- বহু লেখনি কতিপয় দুষ্কৃতিকারী নিজের নামে চালিয়ে দিয়েছেন, যা সম্পূর্ণরূপে কপিরাইট আইনের লঙ্ঘন। ভবিষ্যতে আবারও এমনটি হলে প্রথমত গুগলের কাছে রিপোর্ট করা হবে ও দ্বিতীয়ত তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই কপিরাইট আইনের আওতায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একই সাথে সকলের জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি যে- Bangla Articles এ প্রকাশিত কোনো লেখনি আপনার ভালো না-ও লাগতে পারে, প্রয়োজনে আপনি এর সমালোচনা কমেন্টের মাধ্যমে করতে পারেন। বাক স্বাধীনতা, চিন্তার বহিঃপ্রকাশ করার অধিকার ও লেখালেখি করার অভ্যাসের জায়গা থেকে লেখক যা ইচ্ছা তাই লিখতে পারেন। তবে তিনি তার যেকোনো লেখনির ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন যাতে করে শালীনতা বজায় রাখা যায় এবং অন্যের ধর্মীয় অনুভূতি, মূল্যবোধ ও অধিকারের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করা যায়। - মুহাম্মাদ আল-আমিন খান, লেখক ও ওয়েব এডমিন, Bangla Articles