গর্ভে বাচ্চার
নড়াচড়া কখন ও কিভাবে অনুভব করবেন? বিস্তারিত গাইড
গর্ভাবস্থায় বাচ্চার নড়াচড়া শোনা বা অনুভব
করা একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। এটি মা এবং শিশুর মধ্যে সম্পর্কের এক অমূল্য
সময়, যা মায়ের জন্য আনন্দদায়ক এবং নিশ্চিত করার একটি উপায় যে শিশুটি সুস্থ
রয়েছে।
বাচ্চার নড়াচড়া কখন
শোনা/অনুভব করা যায়?
১. প্রথম নড়াচড়া (Quickening):
- গর্ভাবস্থায়, সাধারণত ১৬-২৫ সপ্তাহের মধ্যে
প্রথমবারের মতো মা তার শিশুর নড়াচড়া অনুভব করতে পারেন। এটি quickening
নামে পরিচিত।
- প্রথমবারের মতো গর্ভবতী মায়েরা সাধারণত ১৮-২০ সপ্তাহে
শিশুর নড়াচড়া অনুভব করেন। তবে এটি কিছুটা পরিবর্তিত হতে পারে, বিশেষ
করে যদি এটি তাদের প্রথম গর্ভধারণ না হয়।
২. বাচ্চার নড়াচড়া শোনা (Fetal Movement Listening):
- গর্ভাবস্থার পরবর্তী সময়গুলোতে (২৭-৩২ সপ্তাহের মধ্যে)
গর্ভস্থ শিশুর নড়াচড়া কিছুটা স্পষ্ট ও নিয়মিত হতে পারে।
- তবে, বাচ্চার নড়াচড়া শোনা (এটি ভেতর থেকে
শোনা) সাধারণত ডক্টরের মনিটরিং বা অল্ট্রাসনোগ্রাফি এর মাধ্যমে
শোনা যায়, যা মায়ের পেটের মধ্যে শিশুর গতি রেকর্ড করার
জন্য ব্যবহৃত হয়।
কিভাবে বাচ্চার নড়াচড়া শোনা
যায়?
১. ডপলার ফিটাল হার্টবিট
মনিটর (Doppler
Fetal Heartbeat Monitor)
- গর্ভাবস্থার নির্দিষ্ট সময়ে, বিশেষ
করে ১২-১৮ সপ্তাহ পর, ডপলার মনিটর ব্যবহার করে গর্ভস্থ শিশুর হার্টবিট শোনা যায়। এটি একটি অডিও ডিভাইস,
যা গর্ভে থাকা শিশুর হার্টবিটকে শোনায় এবং কিছু ক্ষেত্রে
বাচ্চার নড়াচড়া কেমন হচ্ছে তাও পরোক্ষভাবে অনুভূত হতে পারে।
- ডাক্তারদের দ্বারা ব্যবহৃত একটি সাধারণ যন্ত্র, এটি
গর্ভাবস্থার বিভিন্ন সপ্তাহে শিশুর স্বাস্থ্য সম্পর্কে তথ্য দেয়।
২. অল্ট্রাসনোগ্রাফি (Ultrasound)
- অল্ট্রাসনোগ্রাফি বা ইউএসজি (Ultrasound) একটি উচ্চারণকৌশল (sound waves) ব্যবহার করে যে
কোনো অঙ্গ বা শিশু কীভাবে নড়ছে বা অবস্থান নিচ্ছে তা দেখানো হয়। এটি একটি ছবি
প্রদান করে, যাতে মায়ের পেটের ভিতরে শিশুর নড়াচড়া দেখা
যায়।
- প্রাথমিক ধাপে (১১-১৪ সপ্তাহ) অল্ট্রাসনোগ্রাফি
শিশুদের নড়াচড়া চিহ্নিত করতে ব্যবহার করা হয়, তবে এটি শোনা যায় না,
তবে ছবি অনুযায়ী বাচ্চার পজিশন দেখা যায়।
৩. ফিটাল হার্টবিট মনিটর (Fetal Heartbeat Monitor)
- এটি একটি ডিজিটাল ডিভাইস যা গর্ভস্থ শিশুর হার্টবিট
মনিটর করতে ব্যবহৃত হয়। যখন শিশু গর্ভে নড়াচড়া করে, তখন এটি
তার হার্টবিটের পরিবর্তন সৃষ্টি করতে পারে, যা বিশেষ
ডিভাইসের মাধ্যমে শোনা যায়।
বাচ্চার নড়াচড়া অনুভবের কারণ
এবং গুরুত্ব
- গর্ভাবস্থায় বাচ্চার নড়াচড়া মায়ের জন্য একটি সাইন যে
শিশুটি সুস্থ এবং সক্রিয় রয়েছে। এটি মা এবং শিশুর সুস্থতার গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
- সাধারণত, বাচ্চা গর্ভে নড়াচড়া করে, ঘুরে বেড়ায়, শ্বাস নেয় এবং শরীরের অংশের
নমনীয়তা তৈরি করতে চেষ্টা করে, যা জন্মের পর তার
স্বাভাবিক চলাফেরা এবং সাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
কখন নড়াচড়া কম অনুভূত হলে
চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত?
- যদি আপনার গর্ভাবস্থায় কোনো সময়ে আপনি শিশুর নড়াচড়া কম
অনুভব করেন বা এটি বন্ধ হয়ে যায়, তবে চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করা উচিত।
এটি শিশুর সুস্থতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি সিগন্যাল হতে পারে।
উপসংহার: গর্ভাবস্থায় বাচ্চার নড়াচড়া সাধারণত ১৬-২৫ সপ্তাহের মধ্যে অনুভূত হতে শুরু করে এবং ২৭-৩২ সপ্তাহের মধ্যে নিয়মিত হতে পারে। চিকিৎসকরা এই নড়াচড়া শোনার জন্য ডপলার ফিটাল হার্টবিট মনিটর বা অল্ট্রাসনোগ্রাফি ব্যবহার করে থাকে, যা মায়ের জন্য শিশুর সুস্থতা নিশ্চিত করার একটি উপায়।
সার্চ কী: গর্ভে বাচ্চার নড়াচড়া কখন শুরু হয়, গর্ভাবস্থায় বাচ্চার নড়াচড়া কেমন হয়,
বাচ্চার নড়াচড়া কবে থেকে বোঝা যায়, বাচ্চার
নড়াচড়া অনুভব করার সময়, প্রেগন্যান্সিতে বেবি মুভমেন্ট,
গর্ভে বেবি মুভমেন্ট কখন অনুভব করবেন, বাচ্চার
নড়াচড়া কম মনে হলে কি করবেন, গর্ভাবস্থায় বাচ্চার নড়াচড়া
পর্যবেক্ষণ, বেবি মুভমেন্ট ফিল করার নিয়ম, গর্ভে বাচ্চার নড়াচড়া শুনতে পাবো কি না, বাচ্চার
নড়াচড়া বুঝার উপায়, গর্ভে বাচ্চার নড়াচড়া কত সপ্তাহে
শুরু হয়, বাচ্চার নড়াচড়া কম হলে বিপদ কিনা, বেবি কিক কখন অনুভব হয়, প্রথম বাচ্চা নড়াচড়া কখন
শুরু হয়, বেবি মুভমেন্ট কম মনে হলে কি করব, গর্ভাবস্থায় বাচ্চার নড়াচড়া কেমন হওয়া উচিত, বাচ্চার
নড়াচড়া ও স্বাভাবিক গর্ভাবস্থা
ঘোষণা: এই ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সকল লেখনি সম্পাদক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। Bangla
Articles এর কোনো লেখনি থেকে সম্পূর্ণ অথবা আংশিক কপি করে
সোশ্যাল মিডিয়া ও অন্য কোনো ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা যাবে না। কোনো লেখনি ভালো
লাগলে ও প্রয়োজনীয় মনে হলে এই ওয়েবসাইট থেকেই তা পড়তে পারেন অথবা ওয়েব লিংক
শেয়ার করতে পারেন। গুগল সার্চ থেকে দেখা গেছে যে- বহু লেখনি কতিপয় ব্যক্তি নিজের নামে চালিয়ে দিয়েছেন, যা সম্পূর্ণরূপে কপিরাইট আইনের লঙ্ঘন। ভবিষ্যতে আবারও এমনটি হলে প্রথমত গুগলের
কাছে রিপোর্ট করা হবে ও দ্বিতীয়ত তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই কপিরাইট আইনের আওতায়
আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একই সাথে সকলের জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি যে- Bangla
Articles এ প্রকাশিত কোনো লেখনি আপনার ভালো না-ও
লাগতে পারে, প্রয়োজনে আপনি এর সমালোচনা কমেন্টের মাধ্যমে করতে পারেন। বাক স্বাধীনতা, চিন্তার বহিঃপ্রকাশ করার অধিকার ও লেখালেখি করার অভ্যাসের জায়গা থেকে লেখক ও সম্পাদক যা ইচ্ছা তাই লিখতে পারেন। তবে তিনি তার যেকোনো
লেখনির ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন যাতে করে শালীনতা বজায় রাখা যায় এবং অন্যের ধর্মীয়
অনুভূতি, মূল্যবোধ ও অধিকারের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করা যায়। - সম্পাদক,
Bangla Articles