চর্ম রোগের ঘরোয়া
চিকিৎসা – দাদ, চুলকানি, একজিমা ও ব্রণের ঘরোয়া প্রতিকার ও উপায়
নিচে চর্ম রোগগুলোর
ঘরোয়া চিকিৎসা উপস্থাপন করছি। প্রতিটি সমস্যার কারণ, উপসর্গ ও
প্রতিকারের পেছনে যুক্তিসহ তুলে ধরা হলো, যেন আপনি বুঝে
ব্যবহার করতে পারেন।
১. চুলকানি ও ত্বকে র্যাশ
(Itching
& Rash)
🔹 সমস্যার কারণ:
- ধুলাবালি, ঘাম, অ্যালার্জি,
পোকার কামড় বা রাসায়নিকযুক্ত প্রসাধনী ব্যবহার
- কখনও লিভার সমস্যা বা অতিরিক্ত ড্রাই স্কিনও কারণ হতে
পারে
ঘরোয়া প্রতিকার ও
ব্যাখ্যা:
১. নারকেল তেল ও লেবুর রস
➡ লেবুতে রয়েছে অ্যান্টিসেপটিক ও
অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান, যা ব্যাকটেরিয়া মারে এবং
প্রদাহ কমায়।
➡ নারকেল তেল ত্বকে ময়েশ্চার যোগায়, যা চুলকানির প্রশমন করে।
ব্যবহার পদ্ধতি: সমপরিমাণ
লেবুর রস ও নারকেল তেল মিশিয়ে আক্রান্ত স্থানে দিনে ২ বার লাগান।
২. শসার রস
➡ ঠান্ডা প্রকৃতির শসা ত্বকে প্রাকৃতিক ঠান্ডক
ও হাইড্রেশন দেয়, চুলকানি কমায়।
ব্যবহার পদ্ধতি: শসা কেটে রস
বের করে সরাসরি লাগান।
৩. বেসন ও দই
➡ বেসন ত্বক পরিষ্কার করে এবং দইয়ের ল্যাকটিক
অ্যাসিড ব্যাকটেরিয়া ও চুলকানি কমায়।
২. ফাঙ্গাল ইনফেকশন
(দাদ, ঘামাচি, ছত্রাক)
সমস্যার কারণ:
- গরম ও আর্দ্র আবহাওয়া
- অপরিষ্কার কাপড়
- নিয়মিত গোসল না করা বা ঘামে ভেজা কাপড় পরে থাকা
ঘরোয়া প্রতিকার ও
ব্যাখ্যা:
১. রসুন পেস্ট
➡ রসুনে থাকে অ্যালিসিন, যা প্রাকৃতিক অ্যান্টিফাঙ্গাল উপাদান। এটি ছত্রাকের বৃদ্ধি রোধ করে।
ব্যবহার পদ্ধতি: কয়েক কোয়া
রসুন পিষে পেস্ট বানিয়ে দিনে ১-২ বার লাগান। (সেন্সিটিভ ত্বকে সরাসরি না লাগানো
ভালো)
২. আপেল সিডার ভিনেগার
➡ এতে আছে অ্যাসিডিক উপাদান, যা ছত্রাক ধ্বংস করে এবং ক্ষত জায়গা শুকাতে সাহায্য করে।
ব্যবহার পদ্ধতি: পানি দিয়ে
হালকা পাতলা করে মিশিয়ে তুলা দিয়ে লাগান।
৩. নিম ও তেজপাতা সিদ্ধ পানি
➡ নিম অ্যান্টিফাঙ্গাল ও অ্যান্টিসেপটিক,
তেজপাতা প্রদাহ কমায়।
ব্যবহার পদ্ধতি: ১৫ মিনিট
পানি ফুটিয়ে ওই পানিতে গোসল করুন।
৩. শুষ্ক ও ফাটা ত্বক
(Dry
& Cracked Skin)
সমস্যার কারণ:
- শীতকালে বাতাসে আর্দ্রতা কমে যাওয়া
- অতিরিক্ত সাবান ব্যবহার
- পানির অভাব
ঘরোয়া প্রতিকার ও
ব্যাখ্যা:
১. নারকেল তেল
➡ এটি একটি প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার। ত্বকে
মসৃণতা এনে ফাটাভাব দূর করে।
ব্যবহার পদ্ধতি: রাতে ঘুমানোর
আগে আক্রান্ত স্থানে তেল মালিশ করুন।
২. অ্যালোভেরা জেল
➡ অ্যালোভেরাতে রয়েছে ভিটামিন E ও অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান যা ত্বক শান্ত ও হাইড্রেট করে।
৩. দুধ ও মধু প্যাক
➡ দুধ ত্বক নরম রাখে, আর
মধুতে অ্যান্টিসেপটিক বৈশিষ্ট্য আছে।
৪. একজিমা ও
সোরিয়াসিস (Eczema & Psoriasis)
🔹 সমস্যার কারণ:
- ইমিউন সিস্টেমের অস্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া
- মানসিক চাপ, ডায়েট, অ্যালার্জি
ঘরোয়া প্রতিকার ও
ব্যাখ্যা:
১. অ্যালোভেরা ও নারকেল তেল
মিশ্রণ
➡ চুলকানি, র্যাশ ও
ফাটা ত্বকে এটি খুবই কার্যকর।
ব্যবহার পদ্ধতি: দিনে ২ বার
আক্রান্ত স্থানে লাগান।
২. ওটমিল পেস্ট
➡ ওটস ত্বকের প্রদাহ কমায়, ত্বককে আরাম দেয়।
৩. হলুদ ও মধু পেস্ট
➡ হলুদ অ্যান্টিসেপটিক, মধু
প্রদাহ রোধে কাজ করে।
৫. ব্রণ ও তেলতেলে
ত্বক (Acne
& Oily Skin)
সমস্যার কারণ:
- হরমোনের পরিবর্তন
- তেলতেলে খাবার
- ত্বক অপরিষ্কার রাখা
ঘরোয়া প্রতিকার ও ব্যাখ্যা:
১. টমেটোর রস
➡ টমেটোতে লাইকোপেন থাকে, যা ত্বকের তেল নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং ব্রণ শুকাতে সাহায্য করে।
২. বেসন ও লেবুর রস
➡ বেসন ত্বক পরিষ্কার করে, লেবুতে থাকে সাইট্রিক অ্যাসিড যা ব্রণ দূর করে।
৩. মুলতানি মাটি
➡ এটি অতিরিক্ত তেল শোষণ করে এবং ব্রণ কমায়।
সতর্কতা ও পরামর্শ:
- চুলকানি বা ফাঙ্গাস ছড়িয়ে পড়লে চিকিৎসকের
পরামর্শ নিন
- গর্ভবতী বা শিশুদের ক্ষেত্রে ঘরোয়া
প্রতিকার ব্যবহারের আগে সাবধান থাকুন
- প্রতিকার ব্যবহারের আগে Patch Test করুন
- তাজা ও পরিচ্ছন্ন উপাদান ব্যবহার করুন সব
সময়
আপনার যদি নির্দিষ্ট
কোনো রোগ বা সমস্যা থাকে, যেমন: সোরিয়াসিস, দাদ,
ঘামাচি, ব্রণ বা রিঙওয়ার্ম, তাহলে আপনি চাইলে নির্দিষ্ট সমস্যার জন্য পৃথকভাবে চিকিৎসা ও খাদ্যাভ্যাস
পরামর্শ দিতে পারি। বলুন শুধু কোন সমস্যা নিয়ে জানতে চান।
সার্চ কী: চর্ম রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা, দাদের ঘরোয়া চিকিৎসা, চুলকানির ঘরোয়া চিকিৎসা, একজিমার ঘরোয়া চিকিৎসা,
সোরিয়াসিসের প্রাকৃতিক চিকিৎসা, ব্রণের
ঘরোয়া প্রতিকার, ত্বকের রোগের হোম রেমেডি, ঘরোয়া চিকিৎসায় ত্বক সুস্থ রাখার উপায়, ছত্রাক
সংক্রমণের ঘরোয়া উপায়, খোসপাচড়ার প্রাকৃতিক সমাধান,
অ্যালার্জি জনিত চুলকানি চিকিৎসা, ঘরে বসে
চর্মরোগের চিকিৎসা, ফাঙ্গাল ইনফেকশনের হোম রেমেডি, প্রাকৃতিকভাবে ত্বক পরিষ্কার রাখার উপায়, ত্বকের
ইনফেকশন দূর করার ঘরোয়া উপায়
ঘোষণা: এই ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সকল লেখনি সম্পাদক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। Bangla Articles এর কোনো লেখনি থেকে সম্পূর্ণ অথবা আংশিক কপি করে সোশ্যাল মিডিয়া ও অন্য কোনো ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা যাবে না। কোনো লেখনি ভালো লাগলে ও প্রয়োজনীয় মনে হলে এই ওয়েবসাইট থেকেই তা পড়তে পারেন অথবা ওয়েব লিংক শেয়ার করতে পারেন। গুগল সার্চ থেকে দেখা গেছে যে- বহু লেখনি কতিপয় ব্যক্তি নিজের নামে চালিয়ে দিয়েছেন, যা সম্পূর্ণরূপে কপিরাইট আইনের লঙ্ঘন। ভবিষ্যতে আবারও এমনটি হলে প্রথমত গুগলের কাছে রিপোর্ট করা হবে ও দ্বিতীয়ত তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই কপিরাইট আইনের আওতায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একই সাথে সকলের জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি যে- Bangla Articles এ প্রকাশিত কোনো লেখনি আপনার ভালো না-ও লাগতে পারে, প্রয়োজনে আপনি এর সমালোচনা কমেন্টের মাধ্যমে করতে পারেন। বাক স্বাধীনতা, চিন্তার বহিঃপ্রকাশ করার অধিকার ও লেখালেখি করার অভ্যাসের জায়গা থেকে লেখক ও সম্পাদক যা ইচ্ছা তাই লিখতে পারেন। তবে তিনি তার যেকোনো লেখনির ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন যাতে করে শালীনতা বজায় রাখা যায় এবং অন্যের ধর্মীয় অনুভূতি, মূল্যবোধ ও অধিকারের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করা যায়। - সম্পাদক, Bangla Articles