বাচ্চা হবার পর বুকে
দুধ না আসলে করণীয় – নবজাতকের জন্য সঠিক সমাধান ও মায়েদের করণীয়
বাচ্চা জন্মের পর
অনেক মায়েরই প্রথমদিকে বুকের দুধ কম আসে বা একেবারেই আসে না। এটি একটি স্বাভাবিক
বিষয় এবং সাধারণত সাময়িক। তবে মায়ের শারীরিক ও মানসিক অবস্থা, খাদ্যাভ্যাস,
ঘুম, স্ট্রেস, এমনকি
প্রসবের ধরনও (স্বাভাবিক বা সিজারিয়ান) এ ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলে। নিচে
বিস্তারিতভাবে করণীয় বিষয়গুলো আলোচনা করা হলো—
১. শিশুকে বারবার
স্তন্যপান করানো
- নবজাতককে যত বেশি বার বুকের দুধ খাওয়ানো হবে, তত
দ্রুত দুধ আসা শুরু করে।
- প্রথমদিকে শিশুকে প্রতি ২-৩ ঘণ্টা অন্তর বুকের
সাথে লাগাতে হবে, এমনকি রাতে ঘুম ভেঙে হলেও খাওয়াতে হবে।
- শিশুর চোষণই মায়ের শরীরে দুধ আসার প্রধান প্রাকৃতিক
উদ্দীপনা।
২. ত্বক-সংস্পর্শ (Skin-to-Skin Contact)
- মায়ের বুকে শিশুকে উলঙ্গ করে রাখলে (শুধু ডায়াপার
থাকবে) হরমোন নিঃসরণ বাড়ে যা দুধ উৎপাদনে সাহায্য করে।
- এই সংস্পর্শে মা ও শিশুর মধ্যে ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয় এবং
শিশুর চোষার প্রবণতা বাড়ে।
৩. মায়ের পর্যাপ্ত
বিশ্রাম ও ঘুম
- প্রসবের পর মা ক্লান্ত থাকেন, ফলে
হরমোনাল ভারসাম্য নষ্ট হয়।
- পর্যাপ্ত ঘুম না হলে দুধ আসতে দেরি হয়।
- পরিবারের সদস্যদের উচিত মাকে বিশ্রাম দেওয়ার জন্য
সহযোগিতা করা।
৪. মানসিক চাপ ও
দুশ্চিন্তা কমানো
- স্ট্রেস বা দুশ্চিন্তা দুধ আসাকে দেরি করায়।
- মাকে আশ্বস্ত করা উচিত যে দুধ না আসা সাময়িক সমস্যা
এবং ধীরে ধীরে এটি স্বাভাবিক হবে।
- সাপোর্টিভ পরিবেশ ও পরিবারের সহযোগিতা মাকে মানসিকভাবে
শান্ত রাখতে সাহায্য করে।
৫. সঠিকভাবে শিশুকে
স্তন্যপান করানো
- অনেক সময় দুধ আসছে, কিন্তু শিশু ঠিকমতো চুষতে
পারছে না।
- শিশুর মাথা ও শরীর সোজা করে মায়ের বুকে লাগাতে হবে।
- মুখে পুরো বোঁটা ও এর আশপাশের গাঢ় অংশ (areola) ঢুকতে
হবে।
৬. পর্যাপ্ত পানি ও
তরল খাবার গ্রহণ
- দুধ উৎপাদনের জন্য মায়ের শরীরে পর্যাপ্ত পানি থাকা
জরুরি।
- প্রতিদিন কমপক্ষে ৮-১০ গ্লাস পানি পান করতে
হবে।
- সাথে ফলের জুস, স্যুপ, দুধ,
ডাবের পানি ইত্যাদি খেলে উপকার পাওয়া যায়।
৭. পুষ্টিকর খাবার
খাওয়া
- প্রসূতি মায়ের জন্য সুষম খাদ্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
- শাক-সবজি, ফলমূল, ডাল,
মাছ, মাংস, ডিম,
দুধ খাওয়া দরকার।
- বিশেষ করে ডালিম, খেজুর,
কলা, শাকসবজি, ওটস,
বাদাম, ডিম, দুধ বুকের দুধ
বাড়াতে সহায়ক।
৮. দুধ উৎপাদন
বাড়াতে কার্যকর কিছু ঘরোয়া খাবার
- মেথি, মৌরি, কালোজিরা,
আদা, রসুন, জিরা,
ডালিম বীজ ইত্যাদি দুধ আসতে সাহায্য করে।
- তবে পরিমাণ বুঝে খেতে হবে এবং ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া
ভালো।
৯. মেডিক্যাল সাপোর্ট
- অনেক সময় হরমোনজনিত কারণে দুধ আসে না বা কম আসে।
- এ ক্ষেত্রে ডাক্তার কিছু ওষুধ দিতে পারেন যা দুধ
উৎপাদনে সাহায্য করে।
- প্রয়োজনে ব্রেস্ট পাম্প ব্যবহার করে দুধ বের করে
স্তনকে উত্তেজিত করা যেতে পারে।
১০. বিকল্প ব্যবস্থা
- যদি দুধ একেবারেই না আসে, তবে
শিশুকে ফর্মুলা মিল্ক বা ডাক্তারের নির্দেশনা অনুযায়ী অন্য দুধ
খাওয়ানো যায়।
- তবে এ সিদ্ধান্ত অবশ্যই শিশুরোগ বিশেষজ্ঞের
পরামর্শে নিতে হবে।
সারসংক্ষেপ: প্রসবের পর দুধ না
আসা একটি স্বাভাবিক ঘটনা। এতে ভয় বা দুশ্চিন্তা করার কিছু নেই। নিয়মিত শিশুকে
বুকের সাথে লাগানো, মায়ের বিশ্রাম, সঠিক খাবার গ্রহণ এবং
মানসিকভাবে শান্ত থাকা—এসব করলেই সাধারণত কয়েক দিনের মধ্যে দুধ আসা শুরু হয়।
তবুও যদি সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী হয়, অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ
নিতে হবে।
সার্চ কী: বাচ্চা হবার পর দুধ না আসলে করণীয়, বুকের দুধ বাড়ানোর উপায়, নবজাতকের জন্য দুধ না আসলে কি করবেন, সন্তান জন্মের
পর দুধ না আসা সমস্যা, মায়ের বুকের দুধ না আসলে করণীয়,
শিশুর জন্য বুকের দুধ না এলে করণীয়, বুকের
দুধ আসার ঘরোয়া উপায়, মায়ের দুধ না এলে নবজাতকের যত্ন,
দুধ বাড়ানোর প্রাকৃতিক উপায়, ল্যাকটেশন
সমস্যা সমাধান, দুধ না আসলে ডাক্তারের পরামর্শ, বাচ্চার জন্য দুধ না আসলে বিকল্প, বাচ্চার জন্য
মায়ের দুধের গুরুত্ব, বুকের দুধ বাড়ানোর খাবার, প্রসবের পর দুধ না এলে করণীয়, বুকের দুধ ঝরার
সমস্যা সমাধান, শিশুর জন্য কৃত্রিম দুধের ঝুঁকি, বুকের দুধ না এলে কোন ডাক্তার দেখাবেন, নবজাতকের দুধ
সমস্যা সমাধান।
ঘোষণা: এই ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সকল লেখনি সম্পাদক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। Bangla Articles এর কোনো লেখনি থেকে সম্পূর্ণ অথবা আংশিক কপি করে সোশ্যাল মিডিয়া ও অন্য কোনো ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা যাবে না। কোনো লেখনি ভালো লাগলে ও প্রয়োজনীয় মনে হলে এই ওয়েবসাইট থেকেই তা পড়তে পারেন অথবা ওয়েব লিংক শেয়ার করতে পারেন। গুগল সার্চ থেকে দেখা গেছে যে- বহু লেখনি কতিপয় ব্যক্তি নিজের নামে চালিয়ে দিয়েছেন, যা সম্পূর্ণরূপে কপিরাইট আইনের লঙ্ঘন। ভবিষ্যতে আবারও এমনটি হলে প্রথমত গুগলের কাছে রিপোর্ট করা হবে ও দ্বিতীয়ত তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই কপিরাইট আইনের আওতায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একই সাথে সকলের জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি যে- Bangla Articles এ প্রকাশিত কোনো লেখনি আপনার ভালো না-ও লাগতে পারে, প্রয়োজনে আপনি এর সমালোচনা কমেন্টের মাধ্যমে করতে পারেন। বাক স্বাধীনতা, চিন্তার বহিঃপ্রকাশ করার অধিকার ও লেখালেখি করার অভ্যাসের জায়গা থেকে লেখক ও সম্পাদক যা ইচ্ছা তাই লিখতে পারেন। তবে তিনি তার যেকোনো লেখনির ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন যাতে করে শালীনতা বজায় রাখা যায় এবং অন্যের ধর্মীয় অনুভূতি, মূল্যবোধ ও অধিকারের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করা যায়। - সম্পাদক, Bangla Articles