ঘরে বসেই ইউনিয়ন/পৌরসভা/সিটি
কর্পোরেশনের সকল সনদ এক ঠিকানায়: প্রত্যয়ন অ্যাপ
ডিজিটাল বাংলাদেশের পথচলায় নাগরিকদের জন্য সরকারি
সেবাকে আরও সহজ,
স্বচ্ছ ও দ্রুততর করার জন্য একের পর এক উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। সেই
ধারাবাহিকতায় স্থানীয় সরকার বিভাগের একটি যুগান্তকারী ডিজিটাল উদ্যোগ হলো
“প্রত্যয়ন – সকল সনদ এক ঠিকানায়” মোবাইল অ্যাপ। এই অ্যাপটি নাগরিকদের ঘরে বসে
ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা ও সিটি কর্পোরেশন থেকে প্রয়োজনীয়
সরকারি সনদ বা প্রত্যয়নপত্র সংগ্রহে অতি সহজ, সময়োপযোগী ও
নির্ভরযোগ্য মাধ্যম হিসেবে কাজ করছে।
প্রত্যয়ন অ্যাপ কী?
প্রত্যয়ন (Prottoyon) হলো বাংলাদেশ সরকারের স্থানীয়
সরকার বিভাগের অধীনে চালিত একটি অফিসিয়াল মোবাইল অ্যাপ, যার
মাধ্যমে নাগরিকরা বিভিন্ন ধরণের সরকারি সনদ বা প্রত্যয়নপত্রের জন্য অনলাইনে আবেদন
করতে পারেন। এটি বিশেষভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যাতে:
- সরকারি সেবা ডিজিটাল করা যায়
- নাগরিকদের সময় ও অর্থ সাশ্রয় হয়
- অফিসে যাতায়াত ও লাইনে দাঁড়ানোর ঝামেলা কমে
- দূর্নীতি ও মধ্যস্বত্বভোগীর প্রভাব হ্রাস পায়
- নাগরিকরা স্বচ্ছ, সহজ ও নির্ভরযোগ্য উপায়ে সেবা পেতে
পারেন
প্রত্যয়ন অ্যাপটি প্রতিটি নাগরিকের জন্য ডিজিটাল
সুবিধার এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত করেছে।
কোন কোন সনদ পাওয়া যায়?
এই অ্যাপে বর্তমানে ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা এবং
সিটি কর্পোরেশন থেকে ইস্যুকৃত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সনদের জন্য আবেদন করা যায়। এর
মধ্যে অন্যতম:
- নাগরিকত্ব সনদ
- চারিত্রিক সনদ
- পারিবারিক সনদ
- উত্তরাধিকার সনদ
- অবিবাহিত সনদ
- বিবাহিত সনদ
- বার্ষিক আয়ের সনদ
- ভূমিহীন সনদ
- প্রতিবন্ধী সনদ
- নতুন ভোটার প্রত্যয়ন
- একই ব্যক্তি প্রত্যয়ন
- পুনঃবিবাহ সংক্রান্ত সনদ (যথাযথ ক্ষেত্রে)
এক কথায় বলতে গেলে, দৈনন্দিন জীবনে প্রয়োজনীয় প্রায়
সব গুরুত্বপূর্ণ সনদই এখন এক অ্যাপের মাধ্যমে ঘরে বসে পাওয়া সম্ভব।
প্রত্যয়ন অ্যাপ ব্যবহারের ধাপে ধাপে নির্দেশিকা
১. অ্যাপ ডাউনলোড
গুগল প্লে স্টোরে “প্রত্যয়ন – সকল সনদ এক ঠিকানায়” লিখে সার্চ করে
অ্যাপটি ডাউনলোড করুন।
২. রেজিস্ট্রেশন ও লগইন
- মোবাইল নম্বর
দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করুন
- OTP যাচাই
করুন
- প্রয়োজনীয়
ব্যক্তিগত তথ্য প্রদান করুন
৩. সনদের ধরন নির্বাচন
ড্যাশবোর্ড থেকে প্রয়োজনীয় সনদের ক্যাটাগরি নির্বাচন করুন।
৪. তথ্য পূরণ ও কাগজপত্র আপলোড
- জাতীয় পরিচয়পত্র
- সদ্য তোলা ছবি
- প্রয়োজন অনুযায়ী
অন্যান্য ডকুমেন্ট
৫. আবেদন সাবমিট ও ফি পরিশোধ
অনলাইন মাধ্যমে নির্ধারিত সরকারি ফি পরিশোধ করুন।
৬. আবেদন ট্র্যাকিং
ড্যাশবোর্ড থেকে আবেদনটির বর্তমান অবস্থা জানুন—Pending,
Approved বা Rejected।
প্রত্যয়ন অ্যাপের প্রধান সুবিধা
ঘরে বসে আবেদন: অফিসে যাওয়ার ঝামেলা নেই, লাইনে দাঁড়ানোর প্রয়োজন নেই।
সময় ও খরচ সাশ্রয়: যাতায়াত খরচ ও
অপ্রয়োজনীয় সময় অপচয় কমে।
স্বচ্ছ ও দালালমুক্ত সেবা: আবেদন
সরাসরি সরকারি সিস্টেমে যায়, মধ্যস্বত্বভোগীর সুযোগ নেই।
২৪/৭ আবেদন সুবিধা: দিন-রাত যেকোনো সময়
আবেদন করা যায়।
আবেদন ট্র্যাকিং সিস্টেম: আবেদন কোন
পর্যায়ে আছে তা সহজেই জানা যায়।
কে কে ব্যবহার করতে পারেন?
- ইউনিয়ন পরিষদের নাগরিক
- পৌরসভার নাগরিক
- সিটি কর্পোরেশন এলাকার নাগরিক
- শিক্ষার্থী
- চাকরিপ্রার্থী
- সাধারণ জনগণ
যারা স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান থেকে সরকারি সনদ
বা প্রত্যয়নপত্রের প্রয়োজন অনুভব করেন, তারা সবাই এই অ্যাপ ব্যবহার করতে পারবেন।
নিরাপত্তা ও নির্ভরযোগ্যতা
প্রত্যয়ন অ্যাপ একটি সরকারি ও নিরাপদ
প্ল্যাটফর্ম। ব্যবহারকারীর তথ্য সুরক্ষিত থাকে এবং শুধুমাত্র সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষই
তথ্য যাচাই ও অনুমোদন দিতে সক্ষম। ফলে ভুয়া সনদ বা জালিয়াতির সম্ভাবনা অত্যন্ত কম।
বাস্তব জীবনে গুরুত্ব
চাকরি, শিক্ষা, ব্যাংকিং,
পাসপোর্ট, ভিসা অথবা সরকারি-বেসরকারি কাজে এখন
প্রায় সবসময় একাধিক সনদ প্রয়োজন। প্রত্যয়ন অ্যাপের মাধ্যমে:
- গ্রাম ও শহর উভয় অঞ্চলের নাগরিক ডিজিটাল সুবিধা
পাচ্ছেন
- সরকারি সেবায় সমতা বজায় হচ্ছে
- সরকারি অফিসের চাপ কমছে
এটি ডিজিটাল গভর্ন্যান্সের এক সফল উদাহরণ।
ব্যবহার সংক্রান্ত
গুরুত্বপূর্ণ টিপস
- তথ্য পূরণের সময় জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী সঠিক তথ্য
দিন
- স্পষ্ট ও পরিষ্কার কাগজপত্র আপলোড করুন
- আবেদন সাবমিট করার আগে সব তথ্য যাচাই করুন
- আবেদন নম্বর সংরক্ষণ করুন
প্রশ্নোত্তর (১০টি)
১. প্রত্যয়ন অ্যাপ কীভাবে ডাউনলোড করা যাবে?
গুগল প্লে স্টোর থেকে “প্রত্যয়ন – সকল সনদ এক ঠিকানায়” লিখে সার্চ
করে ডাউনলোড করুন।
২. কোন কোন সনদ পাওয়া যায়?
নাগরিকত্ব, চারিত্রিক, পারিবারিক,
উত্তরাধিকার, বিবাহিত ও অবিবাহিত সনদ, বার্ষিক আয়ের সনদ, ভূমিহীন সনদ, প্রতিবন্ধী সনদ, ভোটার প্রত্যয়ন ইত্যাদি।
৩. আবেদন করার জন্য কি কোন অফিসে যাওয়া প্রয়োজন?
না, সম্পূর্ণ আবেদন অনলাইনে করা সম্ভব।
৪. ফি পরিশোধ কিভাবে করতে হবে?
অ্যাপের মাধ্যমে অনলাইনে সরকারি ফি পরিশোধ করতে হবে।
৫. আবেদন ট্র্যাকিং কিভাবে হবে?
ড্যাশবোর্ডে আবেদন পেন্ডিং, অনুমোদিত বা বাতিল
হয়েছে কিনা দেখতে পারবেন।
৬. প্রাপ্ত সনদ কতদিনে পাবেন?
সনদের ধরন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রক্রিয়ার উপর নির্ভর করে।
৭. কি কারও জন্য এটি নিরাপদ?
হ্যাঁ, সরকারি অনুমোদিত, তথ্য সুরক্ষিত ও নির্ভরযোগ্য।
৮. অ্যাপটি কি ২৪/৭ কাজ করে?
হ্যাঁ, যেকোনো সময় আবেদন করতে পারবেন।
৯. কারা ব্যবহার করতে পারবে?
ইউনিয়ন, পৌরসভা, সিটি
কর্পোরেশনের নাগরিক, শিক্ষার্থী, চাকরিপ্রার্থী
ও সাধারণ জনগণ।
১০. কি ধরনের ডকুমেন্ট আপলোড করতে হবে?
জাতীয় পরিচয়পত্র, সদ্য তোলা ছবি, এবং প্রয়োজনীয় অন্যান্য কাগজপত্র।
উপসংহার: “প্রত্যয়ন –
সকল সনদ এক ঠিকানায়” অ্যাপটি নাগরিকদের জন্য সময়োপযোগী ও সেবা বান্ধব ডিজিটাল
উদ্যোগ। এটি শুধু একটি অ্যাপ নয়, বরং সাধারণ মানুষের জীবনকে
সহজ করার শক্তিশালী মাধ্যম। যারা এখনও ব্যবহার করেননি, তাদের
জন্য এটি একটি স্মার্ট সমাধান। ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফল পেতে আজই এই অ্যাপ ব্যবহার
শুরু করুন—সময় বাঁচান, ভোগান্তি কমান, আর
সরকারি সেবা নিন এক ক্লিকে।
প্রত্যয়ন অ্যাপ, Prottoyon App, সকল সনদ এক ঠিকানায়, ইউনিয়ন পরিষদ সনদ, পৌরসভা সনদ, সিটি কর্পোরেশন সনদ, অনলাইন সনদ আবেদন, সরকারি সনদ অনলাইন, নাগরিক সেবা বাংলাদেশ, ডিজিটাল বাংলাদেশ, সনদ ট্র্যাকিং, নাগরিকত্ব সনদ, চারিত্রিক সনদ, পারিবারিক সনদ, বিবাহিত সনদ, অবিবাহিত সনদ, বার্ষিক আয়ের সনদ, ভূমিহীন সনদ, প্রতিবন্ধী সনদ, নতুন ভোটার প্রত্যয়ন, পুনঃবিবাহ সংক্রান্ত সনদ, সরকারি অ্যাপ বাংলাদেশ, ডিজিটাল সনদ, অনলাইন প্রত্যয়নপত্র, Prottoyon App ডাউনলোড, ইউনিয়ন/পৌরসভা/সিটি কর্পোরেশন সনদ, ঘরে বসে আবেদন, সরকারি সেবা অনলাইনে, সহজ ও নির্ভরযোগ্য সনদ, দালালমুক্ত সনদ, নাগরিক সুবিধা
.png)
