কার্যবিশ্লেষণ ও এর প্রয়োজনীয়তা বা গুরুত্ব বর্ননা করুন

Muhammad Al-Amin Khan, Editor in Chief of BA, BJN, BST
0


কার্যবিশ্লেষণ এর সংজ্ঞা, কার্যবিশ্লেষণের প্রয়োজনীয়তা বা গুরুত্ব বর্ননা করুন।

ভূমিকা: একটি প্রতিষ্ঠানের দক্ষতা ও উৎপাদনশীলতা নির্ভর করে সঠিক জনবল ব্যবস্থাপনার ওপর। আর জনবল ব্যবস্থাপনার মূলভিত্তি গড়ে ওঠে কার্যবিশ্লেষণের মাধ্যমে। কার্যবিশ্লেষণ হলো এমন একটি পদ্ধতি যার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি কাজ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহবিশ্লেষণ ও নথিভুক্ত করা হয়যাতে সেই কাজের জন্য যোগ্যতম কর্মী নির্বাচনপ্রশিক্ষণমূল্যায়ন ও অন্যান্য মানবসম্পদ কার্যক্রম সঠিকভাবে সম্পাদন করা যায়।


কার্যবিশ্লেষণের সংজ্ঞা: কার্যবিশ্লেষণ (Job Analysis) হল একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে একটি কাজের প্রকৃতি, দায়িত্ব, কর্তব্য, প্রয়োজনীয় দক্ষতা, জ্ঞান, যোগ্যতা ও দায়িত্ব সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করা হয়। এটি কর্মসংস্থানের কাঠামো নির্ধারণ ও মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন কার্যক্রমে সহায়তা করে।

 

কার্যবিশ্লেষণের প্রয়োজনীয়তা/গুরুত্ব বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হলো:

১. সঠিক নিয়োগ ও নির্বাচনে সহায়তা: কার্যবিশ্লেষণ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে নির্দিষ্ট পদের জন্য যোগ্যতা ও দক্ষতার মাপকাঠি নির্ধারণ করা যায়, যা সঠিক প্রার্থী বাছাইয়ে সহায়ক।

২. প্রশিক্ষণ ও উন্নয়নের প্রয়োজন নির্ধারণ: যে কাজের জন্য কর্মীদের দক্ষতা ঘাটতি রয়েছে, তা বিশ্লেষণের মাধ্যমে নির্ধারণ করে প্রশিক্ষণ কর্মসূচি তৈরি করা যায়।

 

৩. কর্মক্ষমতা মূল্যায়নে সহায়তা: কার্যবিশ্লেষণ কর্মীদের দায়িত্ব ও লক্ষ্য নির্ধারণ করে, ফলে তাদের কর্মক্ষমতা মূল্যায়নের ভিত্তি তৈরি হয়।

৪. পারিশ্রমিক নির্ধারণে সহায়তা: কাজের জটিলতা, দায়িত্ব ও ঝুঁকির পরিমাণ মূল্যায়ন করে উপযুক্ত বেতন কাঠামো তৈরি করা যায়।

 

৫. পদোন্নতি ও পদাবনতি নির্ধারণে সহায়ক: কার্যবিশ্লেষণ কর্মীদের সামগ্রিক দক্ষতা ও ভূমিকার বিশ্লেষণ করতে সহায়তা করে, যা পদোন্নতি বা পুনর্বিন্যাসের সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়ক।

৬. কর্মপরিসরের উন্নয়ন ও পুনর্গঠন: প্রতিষ্ঠানের পরিবর্তনশীল চাহিদার সাথে সংগতি রেখে কাজের প্রকৃতি ও দায়িত্ব পুনর্গঠনের জন্য কার্যবিশ্লেষণ প্রয়োজনীয়।

 

৭. আইনি সুরক্ষা প্রদান: সঠিক কাজের বিবরণী ও যোগ্যতা নির্ধারণ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বৈষম্য সংক্রান্ত মামলা প্রতিরোধে সহায়তা করে।

৮. কর্মীদের সন্তুষ্টি বৃদ্ধি: কর্মীদের ভূমিকা ও প্রত্যাশা স্পষ্টভাবে জানালে তারা নিজেদের দায়িত্ব সম্পর্কে নিশ্চিত হয় এবং কর্মসন্তুষ্টি বৃদ্ধি পায়।

 

উপসংহার: কার্যবিশ্লেষণ একটি প্রতিষ্ঠানের মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনার ভিত্তি হিসেবে কাজ করে। এটি কেবলমাত্র নিয়োগ বা প্রশিক্ষণের জন্য নয়, বরং সংগঠনের দীর্ঘমেয়াদি কৌশলগত পরিকল্পনার জন্য অপরিহার্য। সঠিকভাবে কার্যবিশ্লেষণ করলে কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি পায়, সঠিক কর্মী নির্বাচন করা সম্ভব হয় এবং প্রতিষ্ঠানে একটি সুসংগঠিত ও কার্যকর পরিবেশ গড়ে ওঠে।

 

বিকল্প উত্তর:

কার্যবিশ্লেষণ এর সংজ্ঞা, কার্যবিশ্লেষণের প্রয়োজনীয়তা বা গুরুত্ব বর্ননা করুন।

ভূমিকা: যেকোনো প্রতিষ্ঠানের সফলতা নির্ভর করে তার কর্মীদের দক্ষতা ও কাজের যথাযথ সমন্বয়ের উপর। কর্মীদের দক্ষতা, তাদের কাজের দায়িত্ব, প্রয়োজনীয় দক্ষতা ও ভূমিকা বোঝার জন্য কার্যবিশ্লেষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রক্রিয়া। কার্যবিশ্লেষণ হলো সেই পদ্ধতি যার মাধ্যমে একটি প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি কাজের নির্দিষ্ট দায়িত্ব, প্রয়োজনীয় যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা এবং কাজের ধরন বিশ্লেষণ করা হয়। এই বিশ্লেষণের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কাজের জন্য উপযুক্ত কর্মী নির্বাচন, তাদের প্রশিক্ষণ, মূল্যায়ন, বেতন কাঠামো নির্ধারণ এবং অন্যান্য মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনার কার্যক্রম আরও কার্যকরী ও কাঙ্খিত ফলপ্রসূ হয়।


একটি প্রতিষ্ঠানে কার্যবিশ্লেষণ করা হলে, কর্মীদের দক্ষতা অনুযায়ী তাদের দায়িত্ব পালন করা সহজ হয়ে ওঠে, এবং কর্মীদের সন্তুষ্টি বৃদ্ধি পায়। তাছাড়া, এটি প্রতিষ্ঠানের কাঠামো ও পরিকল্পনা তৈরি করতেও সহায়ক ভূমিকা পালন করে। কার্যবিশ্লেষণ কেবলমাত্র নিয়োগের প্রক্রিয়া নয়, বরং এটি একটি প্রতিষ্ঠানের সামগ্রিক কর্মপরিকল্পনা ও মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনার গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে বিবেচিত হয়।

 

কার্যবিশ্লেষণের প্রয়োজনীয়তা/গুরুত্ব বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হলো:

১. সঠিক নিয়োগ ও নির্বাচনে সহায়তা: কার্যবিশ্লেষণ একটি কাজের প্রকৃতি, দায়িত্ব, প্রয়োজনীয় দক্ষতা ও যোগ্যতার বিষয়ে বিশদ তথ্য সরবরাহ করে। এসব তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠান নির্ধারণ করতে পারে, একটি নির্দিষ্ট পদে কাজ করার জন্য কোন ধরণের অভিজ্ঞতা ও যোগ্যতা থাকা জরুরি। এর ফলে ভুল প্রার্থী নির্বাচন কমে আসে এবং যোগ্য, দক্ষ কর্মী নির্বাচন সম্ভব হয়, যা প্রতিষ্ঠানের উৎপাদনশীলতা ও দক্ষতা বৃদ্ধি করে।

 

২. প্রশিক্ষণ ও উন্নয়নের প্রয়োজন নির্ধারণ: প্রতিটি কাজের জন্য ভিন্ন ভিন্ন দক্ষতা ও জ্ঞানের প্রয়োজন হয়। কার্যবিশ্লেষণের মাধ্যমে জানা যায় কোন কোন দক্ষতায় কর্মীর ঘাটতি রয়েছে এবং সেই ঘাটতি পূরণে কেমন প্রশিক্ষণের প্রয়োজন। এর ফলে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম আরও লক্ষ্যভিত্তিক, কার্যকর এবং দক্ষ হয়ে ওঠে, যা কর্মীদের সক্ষমতা ও আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি করে।

 

৩. কর্মক্ষমতা মূল্যায়নে সহায়তা: কর্মীদের কাজের দায়িত্ব ও প্রত্যাশা পরিষ্কারভাবে নির্ধারিত থাকলে মূল্যায়ন প্রক্রিয়া সহজ হয়। কার্যবিশ্লেষণের মাধ্যমে কর্মীদের কাজের মানদণ্ড ও লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা যায়, যার ভিত্তিতে তাদের কর্মক্ষমতা সঠিকভাবে মূল্যায়ন করা যায়। এটি পুরস্কার, স্বীকৃতি, উন্নয়ন বা প্রয়োজনীয় সংশোধনী পদক্ষেপ গ্রহণে সহায়ক।

 

৪. পারিশ্রমিক নির্ধারণে সহায়তা: একটি কাজের গুরুত্ব, দায়িত্বের পরিমাণ, প্রয়োজনীয় যোগ্যতা ও ঝুঁকির মাত্রা বিশ্লেষণ করে সঠিক পারিশ্রমিক কাঠামো নির্ধারণ করা যায়। কার্যবিশ্লেষণ এই তথ্য সরবরাহ করে, ফলে কর্মীদের মধ্যে ন্যায্যতা ও স্বচ্ছতার অনুভব তৈরি হয়। এটি কর্মীদের অসন্তোষ হ্রাস করে এবং সংগঠনের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব গড়ে তোলে।

 

৫. পদোন্নতি ও পদাবনতি নির্ধারণে সহায়ক: প্রতিটি পদের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা ও যোগ্যতার একটি রূপরেখা কার্যবিশ্লেষণের মাধ্যমে প্রস্তুত হয়। এই রূপরেখার মাধ্যমে নির্ধারণ করা যায় কোন কর্মী পদোন্নতির যোগ্য এবং কে পিছিয়ে রয়েছেন। এর ফলে উন্নয়নমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ, প্রশিক্ষণ প্রদান কিংবা নতুন দায়িত্ব দেওয়া সহজ হয়।

 

৬. কর্মপরিসরের উন্নয়ন ও পুনর্গঠন: প্রতিষ্ঠানের কাঠামো ও কর্মপরিসরের পরিবর্তন প্রয়োজন হলে কার্যবিশ্লেষণ সহায়ক ভূমিকা পালন করে। এটি একটি পদের কাজের পুনঃমূল্যায়ন ও দায়িত্ব পুনর্বিন্যাস করতে সাহায্য করে। যেমন: অপ্রয়োজনীয় কাজ বাদ দেওয়া, নতুন পদ সৃষ্টির সিদ্ধান্ত নেওয়া কিংবা কর্মীদের কাজের চাপ ভারসাম্যপূর্ণভাবে ভাগ করে দেওয়া।

 

৭. আইনি সুরক্ষা প্রদান: বর্তমান সময়ে কর্মক্ষেত্রে বৈষম্য, কর্মী বরখাস্ত ও নিয়োগ সংক্রান্ত অনেক আইনি জটিলতা দেখা যায়। কার্যবিশ্লেষণ থেকে প্রাপ্ত লিখিত কাজের বর্ণনা ও যোগ্যতার মানদণ্ড প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনি মামলায় শক্ত প্রমাণ হিসেবে কাজ করে। এর ফলে প্রতিষ্ঠান নিজেকে আইনগত ঝুঁকি থেকে রক্ষা করতে পারে।

 

৮. কর্মীদের সন্তুষ্টি বৃদ্ধি: যখন একজন কর্মী জানেন তাঁর দায়িত্ব কী, প্রতিষ্ঠানের তাঁর প্রতি কি কি প্রত্যাশা, তখন তাঁর কাজের প্রতি মনোযোগ ও উৎসাহ বেড়ে যায়। কার্যবিশ্লেষণের মাধ্যমে এই স্বচ্ছতা তৈরি হয়। এটি কর্মীদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস ও আস্থার সৃষ্টি করে, যার ফলে তারা দীর্ঘ সময় প্রতিষ্ঠানকে সহযোগিতা করতে আগ্রহী হন।

 

উপসংহার: কার্যবিশ্লেষণ একটি প্রতিষ্ঠানের জনশক্তি ব্যবস্থাপনায় ভিত্তিরূপে কাজ করে। এটি শুধু নিয়োগ বা প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রেই নয়, বরং সঠিক কর্মপরিকল্পনা, কর্মক্ষমতা মূল্যায়ন, আইনি নিরাপত্তা ও সামগ্রিক মানবসম্পদ উন্নয়নের জন্য অপরিহার্য। এক কথায়, কার্যবিশ্লেষণ একটি সংগঠনকে সঠিক কর্মী সঠিক কাজে নিয়োজিত করতে এবং প্রতিষ্ঠানকে দীর্ঘমেয়াদে টেকসই সাফল্যের পথে এগিয়ে নিতে সহায়তা করে।

 

সার্চ কী: কার্য বিশ্লেষণ বলতে কি বোঝায়?, কার্যকরী বিশ্লেষণ কাকে বলে?, জব ডিজাইন কি?, কার্যগত বিশ্লেষণের প্রকারভেদ?, কার্য বর্ণনা ও কার্য নির্দিষ্টকরণের মধ্যে পার্থক্যকার্য নির্দিষ্টকরণ কিকার্য ডিজাইন কাকে বলেকর্ম বিশ্লেষণের দুটি পদ্ধতি উল্লেখ করকর্ম বিশ্লেষণের প্রয়োজনীয়তাকার্য বর্ণনা কিকার্য বিশ্লেষণ কিকার্য বিশ্লেষণের উদ্দেশ্যকাজ বিশ্লেষণের পদ্ধতি ও কৌশল?, কাজ বিশ্লেষণ কী?, জব ডিজাইন কি?, সংখ্যাত্মক বিশ্লেষণ কী?, কার্য বর্ণনা ও কার্য নির্দিষ্টকরণের মধ্যে পার্থক্যকর্ম বিশ্লেষণের দুটি পদ্ধতি উল্লেখ করকার্য বিশ্লেষণের গুরুত্বকার্যনির্দিষ্টকরণ কিকার্য বর্ণনা কিকার্য ডিজাইন কাকে বলেপদ বিশ্লেষণের ধাপ কয়টি ও কি কিকার্য কৌশল কাকে বলে


ঘোষণা: এই ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সকল লেখনি লেখক ও ওয়েব এডমিন মুহাম্মাদ আল-আমিন খান কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। Bangla Articles এর কোনো লেখনি থেকে সম্পূর্ণ অথবা আংশিক কপি করে সোশ্যাল মিডিয়া ও অন্য কোনো ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা যাবে না। কোনো লেখনি ভালো লাগলে ও প্রয়োজনীয় মনে হলে এই ওয়েবসাইট থেকেই তা পড়তে পারেন অথবা ওয়েব লিংক শেয়ার করতে পারেন। গুগল সার্চ থেকে দেখা গেছে যে- বহু লেখনি কতিপয় ব্যক্তি নিজের নামে চালিয়ে দিয়েছেন, যা সম্পূর্ণরূপে কপিরাইট আইনের লঙ্ঘন। ভবিষ্যতে আবারও এমনটি হলে প্রথমত গুগলের কাছে রিপোর্ট করা হবে ও দ্বিতীয়ত তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই কপিরাইট আইনের আওতায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একই সাথে সকলের জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি যে- Bangla Articles এ প্রকাশিত কোনো লেখনি আপনার ভালো না-ও লাগতে পারে, প্রয়োজনে আপনি এর সমালোচনা কমেন্টের মাধ্যমে করতে পারেন। বাক স্বাধীনতা, চিন্তার বহিঃপ্রকাশ করার অধিকার ও লেখালেখি করার অভ্যাসের জায়গা থেকে লেখক যা ইচ্ছা তাই লিখতে পারেন। তবে তিনি তার যেকোনো লেখনির ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন যাতে করে শালীনতা বজায় রাখা যায় এবং অন্যের ধর্মীয় অনুভূতি, মূল্যবোধ ও অধিকারের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করা যায়। - মুহাম্মাদ আল-আমিন খান, লেখক ও ওয়েব এডমিন, Bangla Articles

Post a Comment

0Comments
Post a Comment (0)
To Top