ব্যস্ত জীবনেও সুস্থ
থাকার জন্য ১০টি সহজ স্বাস্থ্যচর্চা কৌশল
আজকের যুগে আমরা সবাই
ব্যস্ত। অফিস, ব্যবসা, পড়াশোনা কিংবা পারিবারিক দায়িত্ব—সবকিছু
মিলিয়ে নিজের শরীর ও মনের যত্ন নেওয়ার সময় যেন খুব কমই পাওয়া যায়। অথচ স্বাস্থ্যই
সব সুখের মূল। ভালো স্বাস্থ্য ছাড়া কোনো সাফল্য, সম্পদ বা
আনন্দই উপভোগ করা যায় না। সুখী ও উৎপাদনশীল জীবন যাপনের জন্য নিয়মিত
স্বাস্থ্যচর্চা অত্যন্ত জরুরি। ব্যস্ত সময়সূচির মধ্যেও কিছু সহজ কৌশল মেনে চললে
সহজেই সুস্থ থাকা সম্ভব। নিচে ব্যস্ত মানুষের জন্য ১০টি কার্যকর স্বাস্থ্যচর্চা
কৌশল তুলে ধরা হলো।
১. প্রতিদিন কমপক্ষে
২০–৩০ মিনিট হাঁটা
হাঁটা হলো সবচেয়ে সহজ
ব্যায়াম, যা শরীরের জন্য অনেক উপকারি। নিয়মিত হাঁটার মাধ্যমে শরীরের রক্ত সঞ্চালন
ঠিক থাকে, ক্যালোরি পোড়ে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমে যায়।
ব্যস্ততার মাঝেও অফিসে যাওয়ার পথে কিছুটা হেঁটে যাওয়া বা সিঁড়ি ব্যবহার করা
স্বাস্থ্য রক্ষার সহজ উপায়।
২. পর্যাপ্ত পানি পান
করা
পানি আমাদের শরীরের
প্রতিটি অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সচল রাখে। ব্যস্ত জীবনে অনেকেই পানি খেতে ভুলে যান, ফলে
ডিহাইড্রেশন, মাথাব্যথা, ক্লান্তি ও
ত্বকের সমস্যা দেখা দেয়। প্রতিদিন অন্তত ৮–১০ গ্লাস পানি পান করলে শরীর সতেজ ও
কর্মক্ষম থাকে।
৩. ঘুমকে অগ্রাধিকার
দেওয়া
প্রতিদিন পর্যাপ্ত
ঘুম না হলে শরীর ও মন দুটোই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ঘুমের ঘাটতি থেকে স্ট্রেস, স্থূলতা,
ডায়াবেটিস এমনকি হৃদরোগ পর্যন্ত হতে পারে। তাই ব্যস্ততার মাঝেও
প্রতিদিন ৬–৮ ঘণ্টা মানসম্মত ঘুম নিশ্চিত করা জরুরি।
৪. স্বাস্থ্যকর খাবার
নির্বাচন
ফাস্ট ফুড বা
প্রক্রিয়াজাত খাবার শরীরের জন্য ক্ষতিকর। ব্যস্ত মানুষরা প্রায়ই দ্রুত খাবারের উপর
নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। এর পরিবর্তে ফল, শাকসবজি, বাদাম,
ডাল এবং পূর্ণ শস্যজাতীয় খাবার বেছে নিলে শরীর প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও
খনিজ পায়, যা দীর্ঘমেয়াদে সুস্থ থাকতে সাহায্য করে।
৫. ছোট বিরতিতে
স্ট্রেচিং করা
কম্পিউটার বা ডেস্কে
বসে কাজ করার সময় দীর্ঘক্ষণ একই ভঙ্গিতে থাকলে শরীর শক্ত হয়ে যায় ও পেশীতে ব্যথা
শুরু হয়। তাই প্রতি ঘণ্টায় অন্তত ২–৩ মিনিট স্ট্রেচিং বা হালকা ব্যায়াম করলে শরীর
নমনীয় থাকে এবং ক্লান্তি দূর হয়।
৬. মানসিক চাপ
নিয়ন্ত্রণে রাখা
ব্যস্ত জীবনে স্ট্রেস
খুবই সাধারণ। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে এটি উচ্চ রক্তচাপ, অনিদ্রা, অবসাদসহ
নানা রোগের কারণ হতে পারে। প্রতিদিন কিছু সময় নিজের জন্য বের করা, প্রার্থনা/ধ্যান, বই পড়া বা প্রিয় কোনো কাজে সময়
দেওয়া মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে।
৭. প্রযুক্তির সঠিক
ব্যবহার
অতিরিক্ত সময় মোবাইল
বা কম্পিউটারের সামনে কাটালে চোখ ও মস্তিষ্কের উপর চাপ পড়ে। তাই “২০-২০-২০ নিয়ম”
মেনে চলা ভালো—অর্থাৎ প্রতি ২০ মিনিট পর ২০ সেকেন্ডের জন্য ২০ ফুট দূরের কোনো
কিছুর দিকে তাকানো। এটি চোখকে আরাম দেয় এবং কর্মক্ষম রাখে।
৮. ধূমপান ও
অ্যালকোহল থেকে বিরত থাকা
ধূমপান ও অ্যালকোহল
শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এগুলো ক্যানসার, হৃদরোগ ও লিভারের সমস্যার ঝুঁকি
বাড়ায়। ব্যস্ত জীবনে স্ট্রেস কমানোর অজুহাতে অনেকেই এগুলো গ্রহণ করে, যা আসলে স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে। এগুলো থেকে দূরে থাকাই দীর্ঘমেয়াদে সুস্থ
থাকার অন্যতম উপায়।
৯. নিয়মিত মেডিকেল
চেকআপ
ব্যস্ততার কারণে
অনেকেই চিকিৎসকের কাছে যেতে চান না। কিন্তু নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করলে অনেক বড়
রোগ প্রাথমিক অবস্থাতেই ধরা পড়ে এবং দ্রুত চিকিৎসা সম্ভব হয়। অন্তত বছরে একবার
পূর্ণ মেডিকেল চেকআপ করা উচিত।
১০. ইতিবাচক মনোভাব
বজায় রাখা
সুস্থতার জন্য শুধু
শরীর নয়, মনের স্বাস্থ্যও জরুরি। ব্যস্ত জীবনে সবসময় ইতিবাচকভাবে চিন্তা করা,
হাসিখুশি থাকা এবং অন্যদের সঙ্গে সুন্দর সম্পর্ক বজায় রাখা মানসিক
সুস্থতা ও সার্বিক স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
উপসংহার: ব্যস্ত জীবনে সুস্থ থাকা কোনো
জটিল কাজ নয়। বরং ছোট ছোট পরিবর্তন এনে নিয়মিত কিছু স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তুললেই
শরীর ও মন দুটোই থাকবে ভালো। মনে রাখতে হবে, স্বাস্থ্যই হলো সবচেয়ে বড় সম্পদ। তাই কাজ ও
দায়িত্বের পাশাপাশি প্রতিদিনের জীবনে এই স্বাস্থ্যচর্চা কৌশলগুলো অন্তর্ভুক্ত করুন
এবং উপভোগ করুন প্রাণবন্ত, সুখী ও রোগমুক্ত জীবন।
ব্যস্ত জীবনে সুস্থ
থাকার উপায়, সহজ স্বাস্থ্যচর্চা কৌশল, ব্যস্ত মানুষের জন্য
স্বাস্থ্য টিপস, প্রতিদিনের স্বাস্থ্য রুটিন, ঘরে বসে স্বাস্থ্য চর্চা, সুস্থ থাকার উপকারিতা,
সময় ব্যবস্থাপনা ও স্বাস্থ্য, সহজ ব্যায়ামের
উপায়, ব্যস্ত জীবনে ফিট থাকার কৌশল, সুস্থ
জীবনধারা গড়ে তোলার উপায়, স্বাস্থ্যকর অভ্যাস তৈরি,
ব্যস্ত মানুষের জন্য ফিটনেস টিপস, রোগ
প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর উপায়, কর্মজীবী মানুষের স্বাস্থ্য
সচেতনতা, ব্যস্ত জীবনেও ব্যায়ামের গুরুত্ব, সুস্থ থাকার সেরা কৌশল, স্বাস্থ্যকর ডায়েট প্ল্যান,
দৈনন্দিন জীবনে ফিটনেস টিপস, জীবনধারায়
পরিবর্তনের মাধ্যমে সুস্থতা, ব্যস্ত মানুষ কিভাবে সুস্থ
থাকবে
ঘোষণা: এই ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সকল লেখনি সম্পাদক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। Bangla Articles এর কোনো লেখনি থেকে সম্পূর্ণ অথবা আংশিক কপি করে সোশ্যাল মিডিয়া ও অন্য কোনো ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা যাবে না। কোনো লেখনি ভালো লাগলে ও প্রয়োজনীয় মনে হলে এই ওয়েবসাইট থেকেই তা পড়তে পারেন অথবা ওয়েব লিংক শেয়ার করতে পারেন। গুগল সার্চ থেকে দেখা গেছে যে- বহু লেখনি কতিপয় ব্যক্তি নিজের নামে চালিয়ে দিয়েছেন, যা সম্পূর্ণরূপে কপিরাইট আইনের লঙ্ঘন। ভবিষ্যতে আবারও এমনটি হলে প্রথমত গুগলের কাছে রিপোর্ট করা হবে ও দ্বিতীয়ত তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই কপিরাইট আইনের আওতায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একই সাথে সকলের জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি যে- Bangla Articles এ প্রকাশিত কোনো লেখনি আপনার ভালো না-ও লাগতে পারে, প্রয়োজনে আপনি এর সমালোচনা কমেন্টের মাধ্যমে করতে পারেন। বাক স্বাধীনতা, চিন্তার বহিঃপ্রকাশ করার অধিকার ও লেখালেখি করার অভ্যাসের জায়গা থেকে লেখক ও সম্পাদক যা ইচ্ছা তাই লিখতে পারেন। তবে তিনি তার যেকোনো লেখনির ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন যাতে করে শালীনতা বজায় রাখা যায় এবং অন্যের ধর্মীয় অনুভূতি, মূল্যবোধ ও অধিকারের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করা যায়। - সম্পাদক, Bangla Articles