যেকোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে
ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি অনুসরণ করা কেন জরুরি
জীবনে আমরা প্রতিনিয়ত অসংখ্য সিদ্ধান্ত নেই—কখনো
ছোট, কখনো বড়। কোন চাকরিতে যোগ দেব, কোন ব্যবসায় বিনিয়োগ
করব, কোথায় টাকা খরচ করব, কোন সম্পর্কে
জড়াবো, কোন কাজ করব কিংবা করব না—প্রতিটি সিদ্ধান্তই আমাদের
ভবিষ্যৎ গঠন করে। কিন্তু মানুষ ভুল করার প্রবণতায় ভরা; আবেগ,
সময়, পরিবেশ, লোকবল বা
ব্যক্তিগত স্বার্থ—বিভিন্ন কারণে আমরা ভুল সিদ্ধান্ত নিতে পারি।
ইসলাম মানুষের এই দুর্বলতা জানে। তাই আল্লাহ
তাআলা মানুষের জন্য পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান দিয়েছেন—যা শুধু ইবাদতের জন্য নয়, প্রতিটি
মুহূর্ত, প্রতিটি কাজ এবং প্রতিটি সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে
পথনির্দেশ করে।
এই কারণে যেকোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি
অনুসরণ করা শুধু উপকারী নয়—অত্যন্ত জরুরি ও অত্যাবশ্যক।
১. ইসলাম হলো সম্পূর্ণ জীবনব্যবস্থা: সিদ্ধান্তের সঠিক রূপরেখা দেয়
ইসলাম কেবল ধর্ম নয়; এটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা।
কুরআনে আল্লাহ বলেন—
“আমি তোমাদের জন্য দ্বীনকে পূর্ণাঙ্গ করে দিলাম…”
(সূরা আল–মায়িদা: ৩)
এ থেকে বোঝা যায়, ব্যক্তিগত জীবন, পরিবার, অর্থনীতি, রাজনীতি, শিক্ষা,
ব্যবসা—সব জায়গায় ইসলামের দিকনির্দেশ বহাল।
আল্লাহর নির্দেশ অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিলে—
- ভুলের সম্ভাবনা
কমে
- ন্যায়-অন্যায়
স্পষ্ট হয়
- নৈতিকতা বজায়
থাকে
- ক্ষতি কম হয়
- সমাজে ভারসাম্য
থাকে
অতএব ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি সিদ্ধান্তকে একটি নিরাপদ কাঠামো প্রদান করে।
২. সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য আল্লাহর নির্দেশই সর্বোত্তম পথপ্রদর্শক
মানুষের জ্ঞান সীমিত। আমরা ভবিষ্যৎ জানি না, পরিণতি বুঝি না। কিন্তু আল্লাহ
সবকিছুই জানেন। তাই সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে আল্লাহর নির্দেশের ওপর নির্ভর করা
বুদ্ধিমানের কাজ।
কুরআনে বলা হয়েছে—
“আল্লাহর ওপর ভরসা কর, তিনি উত্তম
কর্মবিধায়ক।”
(সূরা আল–আহযাব: ৩)
ইসলামী দৃষ্টিকোণ মানুষকে আল্লাহর ওপর নির্ভর করতে শেখায়—যা মনের সন্দেহ, ভয় এবং
দুশ্চিন্তা কমিয়ে দেয়।
৩. আবেগের পরিবর্তে বিবেক ও নৈতিকতা সিদ্ধান্তে ভূমিকা রাখে
মানুষ অনেক সময়—
- রাগে
- প্রেমে
- লোভে
- ভয়ে
- তাড়াহুড়ায়
- চাপের মুখে
ভুল সিদ্ধান্ত নেয়। ইসলাম এসব আবেগগত প্রবণতার বিরুদ্ধে সতর্ক করে।
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন—
“তাড়াহুড়া শয়তানের কাজ।”
ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি মানুষকে শেখায়—
✔ আগে ভাবো
✔ পরামর্শ নাও
✔ ইস্তেখারা করো
✔ তারপর সিদ্ধান্ত নাও
ফলে আবেগ নয়, যুক্তি ও নৈতিকতা প্রধান সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী হয়।
৪. শূরা (পরামর্শ) ইসলামের একটি মূলনীতি
পরামর্শ ছাড়া সিদ্ধান্ত নেওয়া অনেক সময় ঝুঁকিপূর্ণ। তাই কুরআনে আল্লাহ বলেন—
“তাদের কাজ পরস্পর পরামর্শের ভিত্তিতে হয়।”
(সূরা আশ–শূরা: ৩৮)
ইসলাম চায়—
- পরিবারে
- সমাজে
- ব্যবসায়
- রাষ্ট্রে
সবক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত হোক যৌথ আলোচনা ও পরামর্শের
মাধ্যমে।
শূরার সুবিধা—
✔ অভিজ্ঞদের মতামত পাওয়া যায়
✔ ভুলের সুযোগ কমে
✔ অহংকার কমে
✔ সম্পর্ক দৃঢ় হয়
✔ সিদ্ধান্ত হয় স্থিতিশীল ও সঠিক
৫. হালাল-হারামের সঠিক বিবেচনা নিশ্চিত হয়
একজন মুসলিমের জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন—“এটি কি হালাল, নাকি হারাম?”
ইসলাম সিদ্ধান্তের প্রথম ধাপেই হালাল-হারামের যাচাই করতে বলে।
যেমন:
- হারাম ইনকাম
- সুদনির্ভর সিদ্ধান্ত
- প্রতারণামূলক ব্যবসা
- জুলুম
- নৈতিকতা-বিরোধী কাজ
এগুলো থেকে দূরে থাকতে হলে ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি
আবশ্যক।
কারণ আল্লাহ বলেন—
“তোমাদের জন্য যা হালাল, তা গ্রহণ করো; হারাম থেকে দূরে থাকো।”
৬. ইস্তেখারা: দ্বিধা দূর
করার অনন্য ইসলামী পদ্ধতি
ইসলাম সিদ্ধান্ত গ্রহণে একটি বিশেষ মাধ্যম
দিয়েছে—ইস্তেখারা।
ইস্তেখারা আমাদের শেখায়—
- আল্লাহর কাছে দোয়া করা
- সঠিক পথের জন্য তাঁর কাছে সাহায্য চাওয়া
- নিজের সীমাবদ্ধতা স্বীকার করা
ইস্তেখারা সিদ্ধান্তকে সহজ করে এবং হৃদয়ে
প্রশান্তি আনে।
অনেক সময় ইস্তেখারা আমাদের এমন সিদ্ধান্ত থেকে
রক্ষা করে, যা ভবিষ্যতে ক্ষতি আনতে পারত।
৭. ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি জীবনকে নৈতিকতা ও সততার পথে পরিচালিত করে
যে সিদ্ধান্তে ইসলামের নৈতিকতা থাকে, সেখানে—
✔ প্রতারণা থাকে না
✔ অন্যের অধিকার লঙ্ঘন হয় না
✔ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয় না
✔ সব পক্ষের জন্য ন্যায় প্রতিষ্ঠিত হয়
✔ দায়িত্ববোধ বৃদ্ধি পায়
ইসলাম সত্য,
ন্যায়, ভারসাম্য ও পরোপকারকে মূল্যায়ন করে।
একটি সমাজ বা পরিবার তখনই শান্তিপূর্ণ হয় যখন সিদ্ধান্তগুলো ইসলামের নীতির ওপর
প্রতিষ্ঠিত হয়।
৮. আধ্যাত্মিক ও মানসিক শান্তি প্রদান করে
যে সিদ্ধান্ত ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকে নেওয়া হয়, তা হৃদয়ে শান্তি দেয় কারণ—
✔ এতে আল্লাহর অসন্তুষ্টির ভয় থাকে না
✔ নিজের বিবেক পরিষ্কার থাকে
✔ সংঘাত ও অনুশোচনা কমে
✔ আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পায়
✔ মনে হয়—“আমি সঠিক করেছি; আল্লাহ আমাকে সাহায্য করবেন।”
এটি মানসিক স্থিরতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
৯. ভুল সিদ্ধান্তের নেতিবাচক
পরিণতি থেকে সুরক্ষা দেয়
ইসলামী নির্দেশনা মেনে সিদ্ধান্ত নিলে—
- ক্ষতির ঝুঁকি কমে
- ভবিষ্যৎ সমস্যার সম্ভাবনা কমে
- সিদ্ধান্ত হয় নিরাপদ
- সম্পর্কের টানাপোড়েন কম হয়
- দুনিয়া ও আখেরাত উভয়ই সুরক্ষিত থাকে
ইসলাম ভুলের রাস্তা বন্ধ করে, কল্যাণের
রাস্তা উন্মুক্ত করে।
১০. দুনিয়া ও আখেরাত—উভয় দিকেই সফলতার নিশ্চয়তা দেয়
ইসলাম শুধু দুনিয়ার হিসাব রাখে না; আখেরাতও মনে রাখে।
তাই সিদ্ধান্ত নিতে হয়—
✔ এটা দুনিয়ায় উপকারে আসছে কি?
✔ আখেরাতে এর জবাবদিহি কেমন হবে?
✔ এটি আল্লাহকে খুশি করবে কি?
যে সিদ্ধান্তে দুনিয়া–আখেরাত উভয়ের কল্যাণ থাকে সেটিই প্রকৃত সফলতার পথ।
সংক্ষেপে বলা যায়
যেকোনো সিদ্ধান্তে ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি অনুসরণ
করলে—
- ন্যায় ও সত্য প্রতিষ্ঠিত হয়
- জীবনে বরকত আসে
- আধ্যাত্মিক শান্তি লাভ হয়
- ভুলের সম্ভাবনা কমে
- সম্পর্ক সুন্দর হয়
- সমাজে ভারসাম্য থাকে
- আখেরাতে সফলতা নিশ্চিত হয়
এই কারণেই মুসলিম জীবনে
ইসলামি নির্দেশনার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
বাংলাদেশে সাশ্রয়ী প্রিন্টার, টেকসই
প্রিন্টার বাংলাদেশ, সেরা প্রিন্টার ২০২৫, ইঙ্ক ট্যাঙ্ক প্রিন্টার বাংলাদেশ, লেজার প্রিন্টার
দাম বাংলাদেশ, Epson L3110 review Bangla, Canon G3010 price Bangladesh,
Brother printer price BD, HP LaserJet printer Bangladesh, অফিস
প্রিন্টার কোনটি ভালো, কম বাজেটের প্রিন্টার, বাংলাদেশে অফিস ডিভাইস, সেরা অফিস ডিভাইস ২০২৫,
সাশ্রয়ী অফিস ইকুইপমেন্ট বাংলাদেশ, প্রজেক্টর
দাম বাংলাদেশ, ফটোকপি মেশিন দাম বাংলাদেশ, স্ক্যানার price BD, অফিস সেটআপ গাইড বাংলাদেশ,
ছোট অফিসের জন্য ডিভাইস, Best printers in Bangladesh,
Office devices BD.
ঘোষণা: এই ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সকল লেখনি সম্পাদক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। Bangla Articles এর কোনো লেখনি থেকে সম্পূর্ণ অথবা আংশিক কপি করে সোশ্যাল মিডিয়া ও অন্য কোনো ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা যাবে না। কোনো লেখনি ভালো লাগলে ও প্রয়োজনীয় মনে হলে এই ওয়েবসাইট থেকেই তা পড়তে পারেন অথবা ওয়েব লিংক শেয়ার করতে পারেন। গুগল সার্চ থেকে দেখা গেছে যে- বহু লেখনি কতিপয় ব্যক্তি নিজের নামে চালিয়ে দিয়েছেন, যা সম্পূর্ণরূপে কপিরাইট আইনের লঙ্ঘন। ভবিষ্যতে আবারও এমনটি হলে প্রথমত গুগলের কাছে রিপোর্ট করা হবে ও দ্বিতীয়ত তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই কপিরাইট আইনের আওতায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একই সাথে সকলের জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি যে- Bangla Articles এ প্রকাশিত কোনো লেখনি আপনার ভালো না-ও লাগতে পারে, প্রয়োজনে আপনি এর সমালোচনা কমেন্টের মাধ্যমে করতে পারেন। বাক স্বাধীনতা, চিন্তার বহিঃপ্রকাশ করার অধিকার ও লেখালেখি করার অভ্যাসের জায়গা থেকে লেখক ও সম্পাদক যা ইচ্ছা তাই লিখতে পারেন। তবে তিনি তার যেকোনো লেখনির ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন যাতে করে শালীনতা বজায় রাখা যায় এবং অন্যের ধর্মীয় অনুভূতি, মূল্যবোধ ও অধিকারের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করা যায়। - সম্পাদক, Bangla Articles
.png)
