অভ্যন্তরীণ যোগাযোগের মাধ্যম বা পদ্ধতি সমূহ

Muhammad Al-Amin Khan, Editor in Chief of BA, BJN, BST
0


অভ্যন্তরীণ যোগাযোগের মাধ্যম বা পদ্ধতি সমূহের আলোচনা।

অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ (Internal Communication) হলো একটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে কর্মীদের, দল, বিভাগ বা অন্যান্য অংশের মধ্যে যোগাযোগের প্রক্রিয়া। এটি প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালনা ও সমন্বয়ের জন্য অপরিহার্য। অভ্যন্তরীণ যোগাযোগের মাধ্যম বা পদ্ধতি প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিভিন্নভাবে ব্যবহার করা হয়, যার মাধ্যমে তথ্য, নির্দেশনা, মতামত ও প্রতিক্রিয়া আদান-প্রদান করা হয়।

অভ্যন্তরীণ যোগাযোগের মাধ্যম বা পদ্ধতি:

  1. মৌখিক যোগাযোগ:
    • ফেস-টু-ফেস আলোচনা: কর্মীদের মধ্যে সরাসরি মুখোমুখি আলোচনা বা বৈঠক, যা স্পষ্টতা এবং দ্রুত প্রতিক্রিয়া নিশ্চিত করে।
      • উদাহরণ: অফিস মিটিং, কর্মীকে সাহায্য করার জন্য একে অপরকে মুখোমুখি কথা বলা।
    • টেলিফোন বা ভয়েস কল: ফোনের মাধ্যমে কর্মীদের মধ্যে আলোচনা করা। এটি দ্রুত তথ্য বিনিময়ের জন্য ব্যবহৃত হয়।
      • উদাহরণ: সুপারভাইজারের কাছে কাজের অগ্রগতি জানানো।
  2. লিখিত যোগাযোগ:
    • ইমেইল: এটি একটি সাধারণ এবং দ্রুত মাধ্যম, যা অফিসে নির্দিষ্ট তথ্য বা নির্দেশনা পাঠানোর জন্য ব্যবহৃত হয়।
      • উদাহরণ: টিম মেম্বারদের জন্য কাজের অগ্রগতি সম্পর্কিত ইমেইল পাঠানো।
    • নোটিশ বোর্ড: অফিসের নোটিশ বোর্ডে গুরুত্বপূর্ন তথ্য ও ঘোষণা পোস্ট করা, যা সবাই দেখতে পারে।
      • উদাহরণ: অফিসের ছুটির দিন, পণ্যের নতুন আপডেট বা কর্মীদের জন্য নির্দেশনা।
    • মেমো: এটি ছোট এবং গুরুত্বপূর্ণ নথি যা কর্মীদের মধ্যে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত বা তথ্য দ্রুত পৌঁছানোর জন্য ব্যবহৃত হয়।
      • উদাহরণ: অফিসের নতুন নীতি বা নিয়মাবলী জানাতে মেমো পাঠানো।
  3. ডিজিটাল বা ইলেকট্রনিক যোগাযোগ:
    • ইনহাউস মেসেজিং সিস্টেম: প্রতিষ্ঠানে ইন্টারনাল মেসেজিং সিস্টেম যেমন Slack, Microsoft Teams, বা Zoom ব্যবহৃত হয় যা দ্রুত বার্তা বা তথ্য বিনিময়ে সহায়ক।
      • উদাহরণ: একটি প্রজেক্ট টিমের মধ্যে দৈনন্দিন আপডেট শেয়ার করা।
    • ইন্ট্রানেট: প্রতিষ্ঠানভিত্তিক অনলাইন প্ল্যাটফর্ম যেখানে কর্মীরা নথি, পলিসি, তথ্য বা অভ্যন্তরীণ ঘোষণা দেখতে বা শেয়ার করতে পারে।
      • উদাহরণ: কর্মীদের জন্য ট্রেনিং মডিউল বা কর্মচারী হাতবই ইন্ট্রানেটে আপলোড করা।
  4. সভা ও মিটিং:
    • টিম মিটিং: নির্দিষ্ট কাজের গতি বা সমস্যা নিয়ে আলোচনা করতে টিম সদস্যদের মধ্যে মিটিং অনুষ্ঠিত হয়।
      • উদাহরণ: প্রজেক্টের অগ্রগতি নিয়ে সাপ্তাহিক টিম মিটিং।
    • দপ্তর মিটিং: প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন দপ্তরের মধ্যে যোগাযোগ বাড়ানোর জন্য নিয়মিত মিটিং অনুষ্ঠিত হয়।
      • উদাহরণ: মার্কেটিং ও সেলস বিভাগের মধ্যে মাসিক মিটিং।
  5. প্যানেল আলোচনা ও ওয়ার্কশপ:
    • ওয়ার্কশপ বা প্রশিক্ষণ সেশন: কর্মীদের দক্ষতা উন্নয়ন এবং নতুন নীতিমালা বা প্রক্রিয়া সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দেয়ার জন্য ব্যবহৃত হয়।
      • উদাহরণ: নতুন সফটওয়্যার ব্যবহার শিখানোর জন্য কর্মীদের জন্য একটি ওয়ার্কশপ।
  6. ভিডিও কনফারেন্সিং:
    • ভিডিও কল: বিভিন্ন স্থানে অবস্থানরত কর্মীরা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে একে অপরের সঙ্গে আলোচনা করতে পারেন।
      • উদাহরণ: দূরবর্তী অফিসের কর্মীদের সাথে একটি প্রজেক্ট সম্পর্কিত আলোচনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে।
  7. প্রকাশনা ও রিপোর্টিং:
    • নতুনস্লেটার: প্রতিষ্ঠানের নতুন তথ্য বা অগ্রগতি সম্পর্কে কর্মীদের অবহিত করার জন্য নিয়মিত নতুনস্লেটার প্রকাশ করা হয়।
      • উদাহরণ: মাসিক কর্মচারী নতুনস্লেটার, যেখানে প্রতিষ্ঠানের নতুন খবর, অর্জন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে জানানো হয়।
    • পারফরমেন্স রিপোর্ট: কর্মীদের পারফরমেন্স এবং প্রকল্পের অগ্রগতি সম্পর্কে রিপোর্ট তৈরি করা।
      • উদাহরণ: সেলস টিমের জন্য মাসিক পারফরমেন্স রিপোর্ট।

উপসংহার:

অভ্যন্তরীণ যোগাযোগের মাধ্যম বা পদ্ধতি একটি প্রতিষ্ঠানের সুষ্ঠু পরিচালনা এবং কর্মীদের মধ্যে সমন্বয় নিশ্চিত করতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই মাধ্যমগুলির মাধ্যমে কর্মীরা একে অপরের সঙ্গে তথ্য ভাগাভাগি করতে পারে, নির্দেশনা ও সমর্থন পায় এবং কাজে গতি আনে। সঠিকভাবে ব্যবহৃত হলে অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্ষমতা এবং উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।

ঘোষণা: এই ওয়েবসাইটে (Bangla Articles) প্রকাশিত সকল লেখনি লেখক ও ওয়েব এডমিন মুহাম্মাদ আল-আমিন খান কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। Bangla Articles এর কোনো লেখনি থেকে সম্পূর্ণ অথবা আংশিক কপি করে সোশ্যাল মিডিয়া ও অন্য কোনো ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা যাবে না। কোনো লেখনি ভালো লাগলে ও প্রয়োজনীয় মনে হলে এই ওয়েবসাইট থেকেই তা পড়তে পারেন অথবা ওয়েব লিংক শেয়ার করতে পারেন। গুগল সার্চ থেকে দেখা গেছে যে- বহু লেখনি কতিপয় দুষ্কৃতিকারী নিজের নামে চালিয়ে দিয়েছেন, যা সম্পূর্ণরূপে কপিরাইট আইনের লঙ্ঘন। ভবিষ্যতে আবারও এমনটি হলে প্রথমত গুগলের কাছে রিপোর্ট করা হবে ও দ্বিতীয়ত তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই কপিরাইট আইনের আওতায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একই সাথে সকলের জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি যে- Bangla Articles এ প্রকাশিত কোনো লেখনি আপনার ভালো না-ও লাগতে পারে, প্রয়োজনে আপনি এর সমালোচনা কমেন্টের মাধ্যমে করতে পারেন। বাক স্বাধীনতা, চিন্তার বহিঃপ্রকাশ করার অধিকার ও লেখালেখি করার অভ্যাসের জায়গা থেকে লেখক যা ইচ্ছা তাই লিখতে পারেন। তবে তিনি তার যেকোনো লেখনির ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন যাতে করে শালীনতা বজায় রাখা যায় এবং অন্যের ধর্মীয় অনুভূতি, মূল্যবোধ ও অধিকারের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করা যায়। - মুহাম্মাদ আল-আমিন খান, লেখক ও ওয়েব এডমিন, Bangla Articles

Post a Comment

0Comments
Post a Comment (0)
To Top