আন্তব্যক্তিক যোগাযোগ কি? উদাহরণসহ ব্যাখ্যা

Muhammad Al-Amin Khan, Editor in Chief of BA, BJN, BST
0


আন্তব্যক্তিক যোগাযোগ কিউদাহরণসহ ব্যাখ্যা।


আন্তব্যক্তিক যোগাযোগ (Interpersonal Communication) হলো দুটি বা তার বেশি মানুষের মধ্যে তথ্যধারণাঅনুভূতিমতামত ও অভিজ্ঞতা শেয়ার করার প্রক্রিয়া। এটি সরাসরি বা মুখোমুখি হতে পারে এবং এই যোগাযোগে মানুষ একে অপরের চিন্তা ও অনুভূতিকে বোঝার চেষ্টা করে। আন্তঃব্যক্তিক যোগাযোগ একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগ মাধ্যমকারণ এটি সম্পর্ক গড়ে তোলাসমস্যা সমাধান এবং সহযোগিতার ক্ষেত্রে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।


উদাহরণ: ধরা যাকএকটি অফিসে দুটি সহকর্মী নিজেদের কাজের চাপ নিয়ে আলোচনা করছে। একজন বলছে, "আমি আজকে অনেক কাজ জমে গিয়েছেমনে হচ্ছে আর শেষ করতে পারব না।" আর অন্যজন তাকে বলছে, "তুমি যদি আমাকে কিছু সাহায্য করতে বলোতবে আমরা দ্রুত কাজগুলো শেষ করতে পারব।" এই আলোচনায় তাদের মধ্যে অনুভূতি ও সমবেদনা ব্যক্ত করা হচ্ছে এবং একে অপরকে সাহায্য করার প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছেযা একটি কার্যকর আন্তঃব্যক্তিক যোগাযোগের উদাহরণ।


আন্তঃব্যক্তিক যোগাযোগের বৈশিষ্ট্য:

  1. দ্বিমুখী প্রক্রিয়াএটি একপেশে নয়এতে দুজন বা ততোধিক ব্যক্তির মধ্যে তথ্যের আদান-প্রদান ঘটে।
  2. মুখোমুখি বা সরাসরিসাধারণতএটি সরাসরি যোগাযোগ হতে পারেযেমন মুখে কথা বলা বা ফোনে কথোপকথন।
  3. শরীরী ভাষা ও অঙ্গভঙ্গিকথোপকথনের মধ্যে মানুষের শরীরী ভাষা (যেমন চোখের যোগাযোগমুখাবয়বইত্যাদি) এবং অঙ্গভঙ্গি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
  4. মন্তব্য এবং প্রতিক্রিয়াপ্রতিটি পক্ষ তার অনুভূতিমতামত বা মন্তব্য জানাতে পারে এবং অন্য পক্ষের প্রতিক্রিয়া শুনতে পারে।
  5. সহানুভূতি ও সমঝোতাআন্তঃব্যক্তিক যোগাযোগে একজন অপরজনের অবস্থান বা অনুভূতি বুঝতে সহানুভূতির ভূমিকা থাকে।


আন্তঃব্যক্তিক যোগাযোগের গুরুত্ব:

  1. সম্পর্ক উন্নয়নএটি ব্যক্তিগত ও পেশাগত সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য অপরিহার্য। ভালো আন্তঃব্যক্তিক যোগাযোগ মানুষের মধ্যে বিশ্বাস এবং সমঝোতা সৃষ্টি করে।
  2. মতবিনিময় ও সমস্যা সমাধানএটি দ্বন্দ্ব বা ভুল বোঝাবুঝি সমাধান করতে সহায়ক হতে পারে। সমস্যা আলোচনা করে সমাধান বের করা সহজ হয়।
  3. মানসিক শান্তিকথোপকথন মানুষের মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করেবিশেষত যখন তারা তাদের অনুভূতি বা চিন্তা শেয়ার করতে পারে।
  4. বিশ্বাস ও সমর্থনসহানুভূতি ও বিশ্বাসের মাধ্যমে মানুষ একে অপরকে সমর্থন জানায় এবং একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়।


উপসংহার: আন্তঃব্যক্তিক যোগাযোগ একটি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক দক্ষতাযা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে সম্পর্ক গড়ে তোলার এবং সমস্যা সমাধানের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এটি শুধু কথোপকথন নয়বরং মানুষকে একে অপরের অনুভূতিচিন্তা এবং প্রয়োজন বুঝতে সাহায্য করেএবং এর মাধ্যমে সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হয়।


বিকল্প উত্তর:

আন্তব্যক্তিক যোগাযোগ কী? (What is Interpersonal Communication?)

আন্তব্যক্তিক যোগাযোগ হলো এমন এক ধরণের যোগাযোগ প্রক্রিয়া, যেখানে দুই বা ততোধিক ব্যক্তির মধ্যে মুখোমুখি বা প্রত্যক্ষভাবে তথ্য, অনুভূতি, চিন্তা, মতামত ও আবেগ আদান-প্রদান ঘটে। এটি সাধারণত ব্যক্তিগত, ঘনিষ্ঠ ও অর্থবহ সম্পর্কের মধ্যে হয় এবং মৌখিক বা অমৌখিক উভয় মাধ্যমেই ঘটতে পারে।

 

এই যোগাযোগে অংশগ্রহণকারীরা একে অপরের প্রতি সাড়া দেন, প্রতিক্রিয়া জানান, প্রশ্ন করেন এবং পারস্পরিক বোঝাপড়া গড়ে তোলেন। এটি দৈনন্দিন জীবনের সবচেয়ে সাধারণ এবং গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগ প্রক্রিয়া।

 

উদাহরণসহ ব্যাখ্যা:

উদাহরণ ১: একজন শিক্ষক যখন শ্রেণিকক্ষে কোনো শিক্ষার্থীর সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে আলোচনা করেন—যেমন: তার পড়াশোনা বা আচরণ নিয়ে পরামর্শ দেন—তখন এটি আন্তব্যক্তিক যোগাযোগের উদাহরণ। এখানে শিক্ষক ও শিক্ষার্থী সরাসরি কথা বলছেন, প্রশ্নোত্তর করছেন এবং একটি অর্থপূর্ণ বার্তা আদান-প্রদান করছেন।

 

উদাহরণ ২: দুইজন বন্ধু যখন একে অপরের সাথে তাদের ব্যক্তিগত অনুভূতি, সমস্যা বা পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলেন—যেমন: একজন তার মানসিক দুঃখ প্রকাশ করে, আরেকজন সান্ত্বনা দেয়—তাও আন্তব্যক্তিক যোগাযোগের মধ্যে পড়ে।

 

উদাহরণ ৩: একটি অফিসে বস ও কর্মচারীর মধ্যে সরাসরি আলাপ, যেখানে বস কর্মচারীর কাজ সম্পর্কে মতামত দেন বা প্রতিক্রিয়া শোনেন, সেটিও আন্তব্যক্তিক যোগাযোগ।

 

আন্তব্যক্তিক যোগাযোগের বৈশিষ্ট্য:

  • এটি সাধারণত দুইজন বা অল্প সংখ্যক ব্যক্তির মধ্যে ঘটে।
  • পরস্পরের প্রতিক্রিয়া (Feedback) গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
  • বিশ্বাস ও অনুভব ভাগাভাগির মাধ্যমে সম্পর্ক দৃঢ় হয়।
  • এটি হতে পারে মৌখিক (যেমন মুখে কথা) অথবা অমৌখিক (যেমন: মুখভঙ্গি, দৃষ্টিভঙ্গি, শরীরের ভাষা)

 

উপসংহার: আন্তব্যক্তিক যোগাযোগ হলো এমন একটি মানবিক ও সামাজিক প্রক্রিয়া, যা আমাদের পারস্পরিক সম্পর্ক তৈরি ও রক্ষা করতে সহায়তা করে। এটি পরিবার, বন্ধু, সহকর্মী, শিক্ষক-শিক্ষার্থী সকল সম্পর্কেই গুরুত্বপূর্ণ। সফল আন্তব্যক্তিক যোগাযোগ গড়ে ওঠে বিশ্বাস, খোলামেলা মনোভাব ও শ্রবণ দক্ষতার ভিত্তিতে।

 

সার্চ কী: আন্তঃব্যক্তিক যোগাযোগ কাকে বলে উদাহরণ দাও? অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ কাকে বলে? আন্তঃব্যক্তিক দক্ষতার উদাহরণ কী কী? আন্তর্জাতিক যোগাযোগ কী? আন্ত যোগাযোগ কি. আন্তঃব্যক্তিক দক্ষতা কি, আন্তঃব্যক্তিক যোগাযোগের বৈশিষ্ট্য, ঊর্ধ্বগামী যোগাযোগ কি, আন্তঃব্যক্তিক যোগাযোগ দক্ষতা, নিম্নগামী যোগাযোগের সুবিধা বর্ণনা কর, নিম্নগামী যোগাযোগ কি


ঘোষণা: এই ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সকল লেখনি লেখক ও ওয়েব এডমিন মুহাম্মাদ আল-আমিন খান কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। Bangla Articles এর কোনো লেখনি থেকে সম্পূর্ণ অথবা আংশিক কপি করে সোশ্যাল মিডিয়া ও অন্য কোনো ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা যাবে না। কোনো লেখনি ভালো লাগলে ও প্রয়োজনীয় মনে হলে এই ওয়েবসাইট থেকেই তা পড়তে পারেন অথবা ওয়েব লিংক শেয়ার করতে পারেন। গুগল সার্চ থেকে দেখা গেছে যে- বহু লেখনি কতিপয় ব্যক্তি নিজের নামে চালিয়ে দিয়েছেন, যা সম্পূর্ণরূপে কপিরাইট আইনের লঙ্ঘন। ভবিষ্যতে আবারও এমনটি হলে প্রথমত গুগলের কাছে রিপোর্ট করা হবে ও দ্বিতীয়ত তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই কপিরাইট আইনের আওতায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একই সাথে সকলের জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি যে- Bangla Articles এ প্রকাশিত কোনো লেখনি আপনার ভালো না-ও লাগতে পারে, প্রয়োজনে আপনি এর সমালোচনা কমেন্টের মাধ্যমে করতে পারেন। বাক স্বাধীনতা, চিন্তার বহিঃপ্রকাশ করার অধিকার ও লেখালেখি করার অভ্যাসের জায়গা থেকে লেখক যা ইচ্ছা তাই লিখতে পারেন। তবে তিনি তার যেকোনো লেখনির ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন যাতে করে শালীনতা বজায় রাখা যায় এবং অন্যের ধর্মীয় অনুভূতি, মূল্যবোধ ও অধিকারের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করা যায়। - মুহাম্মাদ আল-আমিন খান, লেখক ও ওয়েব এডমিন, Bangla Articles

Post a Comment

0Comments
Post a Comment (0)
To Top