ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ ব্যবহারের সুবিধা ও অসুবিধা

Muhammad Al-Amin Khan, Editor in Chief of BA, BJN, BST
0



ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ ব্যবহারের সুবিধা ও অসুবিধাগুলো লিখুন


ভূমিকা: যেকোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় কার্যকর যোগাযোগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। একটি প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি স্তরে সুষ্ঠু কর্মকাণ্ড ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ নিশ্চিত করতে তথ্যের যথাযথ আদান-প্রদান আবশ্যক। এই প্রয়োজনে গড়ে ওঠে আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগ ব্যবস্থার ভিত্তি। নিম্নে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ (Formal Communication) ব্যবহারের সুবিধা ও অসুবিধাগুলো বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করা হলো:

 

আনুষ্ঠানিক যোগাযোগের সুবিধাসমূহ:

১. নিয়মিত ও সুসংগঠিত তথ্য প্রবাহ: আনুষ্ঠানিক যোগাযোগে নির্দিষ্ট নিয়ম, কাঠামো ও চ্যানেল অনুসরণ করা হয়। ফলে তথ্য সঠিকভাবে সময়মতো সঠিক স্থানে পৌঁছায়।

 

২. দায়িত্ব ও কর্তব্য নির্ধারণ সহজ হয়: প্রতিটি কর্মকর্তা বা কর্মচারীর দায়িত্ব ও কর্তৃত্ব স্পষ্টভাবে নির্ধারিত থাকে। ফলে জবাবদিহিতার পরিবেশ সৃষ্টি হয়।

 

৩. দলবদ্ধ কার্যক্রমে সমন্বয় রক্ষা: বড় প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন বিভাগের মধ্যে সমন্বয় বজায় রাখতে আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা পালন করে।

 

৪. লিখিত নথিপত্রের প্রমাণ: আনুষ্ঠানিক বার্তা সাধারণত লিখিত হয়। ফলে ভবিষ্যতে কোনো বিরোধ বা ভুল বোঝাবুঝি হলে দলিল হিসেবে ব্যবহার করা যায়।

 

৫. সংগঠন কাঠামোর শৃঙ্খলা বজায় থাকে: প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন থেকে অধস্তন পর্যন্ত নির্দিষ্ট চ্যানেল মেনে চললে শৃঙ্খলা ও নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখা সহজ হয়।

 

৬. প্রতিষ্ঠানিক নীতিমালা বাস্তবায়ন সহজ হয়: আনুষ্ঠানিক ব্যবস্থায় আদেশ, নীতিমালা, ঘোষণা ইত্যাদি কর্মীদের কাছে দ্রুত ও কার্যকরভাবে পৌঁছানো সম্ভব হয়।

 

৭. কর্মীদের মধ্যে পেশাদার মনোভাব তৈরি হয়: আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ পদ্ধতিতে পেশাদারিত্ব বজায় থাকে, যা কর্মীদের আচরণেও প্রতিফলিত হয়।

 

আনুষ্ঠানিক যোগাযোগের অসুবিধাসমূহ:

১. ধীরগতি: নিয়ম ও ধাপ মেনে চলার কারণে জরুরি তথ্য বা সিদ্ধান্ত পৌঁছাতে সময় লাগে।

 

২. অনমনীয়তা: কাঠামোগত সীমাবদ্ধতার কারণে প্রয়োজনমাফিক নমনীয়ভাবে বার্তা আদান-প্রদান করা কঠিন হয়।

 

৩. সৃজনশীলতা দমন হতে পারে: বেশি নিয়ম-কানুনের কারণে কর্মীরা স্বাধীনভাবে মতামত বা নতুন ধারণা প্রকাশে নিরুৎসাহিত বোধ করে।

 

৪. ব্যক্তিগত সম্পর্ক দুর্বল হয়: অতিরিক্ত আনুষ্ঠানিকতার কারণে ব্যক্তিগত সম্পর্ক বা আন্তরিকতা গড়ে ওঠে না, যা টিমওয়ার্কে প্রভাব ফেলে।

 

৫. যোগাযোগ বিভ্রাটের আশঙ্কা: দীর্ঘ চেইন বা ধাপে ধাপে তথ্য আদান-প্রদান করলে অনেক সময় বার্তা বিকৃত হয় বা ভুলভাবে পৌঁছায়।

 

৬. কম সময়োপযোগী: দ্রুত পরিবর্তনশীল ব্যবসায়িক পরিবেশে আনুষ্ঠানিক যোগাযোগের ধীরতা অনেক সময় প্রতিষ্ঠানকে পিছিয়ে দেয়।

 

৭. কর্মীদের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি: কঠোর আনুষ্ঠানিকতা কর্মীদের মধ্যে একধরনের মানসিক দূরত্ব তৈরি করে, যা মনোবল কমিয়ে দিতে পারে।

 

উপসংহার: ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ প্রতিষ্ঠানের কাঠামো ও কার্যকারিতা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ হলেও এর কিছু সীমাবদ্ধতাও রয়েছে। তাই, প্রয়োজনে অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগকে সম্পূরক হিসেবে ব্যবহার করে যোগাযোগ ব্যবস্থাকে আরও গতিশীল করা উচিত।

 

বিকল্প উত্তর:

ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ ব্যবহারের সুবিধা ও অসুবিধাগুলো লিখুন


ভূমিকা: যেকোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় কার্যকর যোগাযোগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। একটি প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি স্তরে সুষ্ঠু কর্মকাণ্ড ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ নিশ্চিত করতে তথ্যের যথাযথ আদান-প্রদান আবশ্যক। এই প্রয়োজনে গড়ে ওঠে আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগ ব্যবস্থার ভিত্তি। নিচে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ ব্যবহারের প্রত্যেকটি সুবিধা ও অসুবিধা বিস্তারিত ব্যাখ্যাসহ উপস্থাপন করা হলো:

 

আনুষ্ঠানিক যোগাযোগের সুবিধাসমূহ (বিস্তারিত বর্ণনা সহ)

১. নিয়মিত ও সুসংগঠিত তথ্য প্রবাহ: আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ নির্দিষ্ট নিয়ম ও পদ্ধতি অনুসরণ করে। প্রতিটি বার্তা নির্দিষ্ট চ্যানেল দিয়ে নির্ধারিত ব্যক্তির কাছে পৌঁছায়। ফলে যোগাযোগ এলোমেলো না হয়ে গোছানোভাবে সম্পন্ন হয়।


২. দায়িত্ব ও কর্তব্য নির্ধারণ সহজ হয়: আনুষ্ঠানিক যোগাযোগে প্রতিটি পদে কর্মরত ব্যক্তির দায়িত্ব ও কর্তৃত্ব স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকে। এতে করে কে কোন কাজ করবে, এবং কী পরিমাণ দায়ভার তার উপর বর্তায়, তা পরিষ্কার হয়। ফলে জবাবদিহিতার পরিবেশ গড়ে ওঠে।


৩. দলবদ্ধ কার্যক্রমে সমন্বয় রক্ষা: একটি প্রতিষ্ঠানে একাধিক বিভাগ একসঙ্গে কাজ করে। আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ ব্যবস্থার মাধ্যমে প্রতিটি বিভাগের মধ্যে সমন্বয় তৈরি হয় এবং কাজের গতি বজায় থাকে।


৪. লিখিত নথিপত্রের প্রমাণ: আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ সাধারণত লিখিত হয় (চিঠি, নোটিশ, মেমো ইত্যাদি)। এতে ভবিষ্যতে কোনো সমস্যা দেখা দিলে পূর্বের নথিপত্র প্রমাণ হিসেবে ব্যবহার করা যায়। এটি আইনি ও প্রশাসনিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ।


৫. সংগঠন কাঠামোর শৃঙ্খলা বজায় থাকে: প্রতিষ্ঠানে প্রতিটি স্তরের ব্যক্তির মধ্যে যোগাযোগের জন্য নির্দিষ্ট চ্যানেল থাকে। কেউ সরাসরি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে এড়িয়ে যোগাযোগ করতে পারে না। এটি একটি সুসংগঠিত ও শৃঙ্খলিত পরিবেশ গড়ে তোলে।


৬. প্রতিষ্ঠানিক নীতিমালা বাস্তবায়ন সহজ হয়: প্রতিষ্ঠান তার বিভিন্ন আদেশ, নির্দেশ, নীতিমালা ইত্যাদি আনুষ্ঠানিকভাবে কর্মীদের কাছে পৌঁছে দেয়। ফলে এ সকল সিদ্ধান্ত সঠিকভাবে কার্যকর হয়।


৭. কর্মীদের মধ্যে পেশাদার মনোভাব তৈরি হয়: আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ পদ্ধতিতে শৃঙ্খলা, দায়িত্ববোধ ও নিয়ম পালন করতে হয়। এর ফলে কর্মীরা পেশাগত আচরণ, ভাষা ও মনোভাব অনুসরণ করতে শেখে।

 

আনুষ্ঠানিক যোগাযোগের অসুবিধাসমূহ

১. ধীরগতি: যেহেতু আনুষ্ঠানিক যোগাযোগে নিয়ম, পর্যায় ও অনুমোদন মানতে হয়, তাই দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ বা বার্তা আদান-প্রদানে সময় লাগে। জরুরি পরিস্থিতিতে এটি সমস্যাজনক হতে পারে।

 

২. অনমনীয়তা: আনুষ্ঠানিক যোগাযোগে প্রক্রিয়া ও কাঠামো পরিবর্তন করা কঠিন। সময় ও পরিস্থিতি অনুযায়ী দ্রুত অভিযোজিত হওয়া যায় না, যার ফলে সিদ্ধান্ত গ্রহণে সীমাবদ্ধতা দেখা দেয়।

 

৩. সৃজনশীলতা দমন হতে পারে: অতিরিক্ত নিয়ম-কানুন ও আদেশ-নির্দেশের চাপে কর্মীরা নিজের মতামত বা নতুন চিন্তা প্রকাশে নিরুৎসাহিত হয়। এতে উদ্ভাবনী চিন্তা বিকশিত হয় না।

 

৪. ব্যক্তিগত সম্পর্ক দুর্বল হয়: বেশি আনুষ্ঠানিকতার ফলে সহকর্মীদের মধ্যে আন্তরিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে না। এতে করে দলীয় কাজ বা সহযোগিতার মানসিকতা কমে যায়।

 

৫. যোগাযোগ বিভ্রাটের আশঙ্কা: একাধিক স্তর পেরিয়ে বার্তা যখন নিচে নামে, তখন তা বিকৃত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে বা ভুলবশত তথ্য পরিবর্তন করে দিতে পারে।

 

৬. কম সময়োপযোগী: আধুনিক ব্যবসা পরিবেশ দ্রুত পরিবর্তিত হয়। তবে আনুষ্ঠানিক যোগাযোগের ধীরতা অনেক সময় ত্বরিত পদক্ষেপ নিতে বাধা দেয়।

 

৭. কর্মীদের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি: কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যে অতিরিক্ত আনুষ্ঠানিকতা থাকলে উভয়ের মধ্যে বিশ্বাস ও ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয় না। এতে কর্মপরিবেশে অসন্তোষ বা মানসিক দূরত্ব দেখা দিতে পারে।

 

উপসংহার: আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ প্রতিষ্ঠানের শৃঙ্খলা, দায়িত্ববোধ ও নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তবে এর সীমাবদ্ধতাগুলো বিবেচনায় রেখে অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগের সাথে ভারসাম্য বজায় রেখে ব্যবহার করাই হবে কার্যকর কৌশল।


সার্চ কী:  আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ, অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগ, ব্যবসায়িক যোগাযোগ, প্রতিষ্ঠানিক যোগাযোগ ব্যবস্থা, যোগাযোগের প্রকারভেদ, আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগের সুবিধা, যোগাযোগের ভূমিকা, ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান, তথ্য আদান-প্রদান, কর্মপরিবেশে যোগাযোগ, প্রতিষ্ঠানের কার্যকারিতা, যোগাযোগ ব্যবস্থাপনা, অফিস যোগাযোগ, সংস্থার যোগাযোগ পদ্ধতি, যোগাযোগের গুরুত্ব

 

ঘোষণা: এই ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সকল লেখনি লেখক ও ওয়েব এডমিন মুহাম্মাদ আল-আমিন খান কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। Bangla Articles এর কোনো লেখনি থেকে সম্পূর্ণ অথবা আংশিক কপি করে সোশ্যাল মিডিয়া ও অন্য কোনো ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা যাবে না। কোনো লেখনি ভালো লাগলে ও প্রয়োজনীয় মনে হলে এই ওয়েবসাইট থেকেই তা পড়তে পারেন অথবা ওয়েব লিংক শেয়ার করতে পারেন। গুগল সার্চ থেকে দেখা গেছে যে- বহু লেখনি কতিপয় ব্যক্তি নিজের নামে চালিয়ে দিয়েছেন, যা সম্পূর্ণরূপে কপিরাইট আইনের লঙ্ঘন। ভবিষ্যতে আবারও এমনটি হলে প্রথমত গুগলের কাছে রিপোর্ট করা হবে ও দ্বিতীয়ত তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই কপিরাইট আইনের আওতায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একই সাথে সকলের জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি যে- Bangla Articles এ প্রকাশিত কোনো লেখনি আপনার ভালো না-ও লাগতে পারে, প্রয়োজনে আপনি এর সমালোচনা কমেন্টের মাধ্যমে করতে পারেন। বাক স্বাধীনতা, চিন্তার বহিঃপ্রকাশ করার অধিকার ও লেখালেখি করার অভ্যাসের জায়গা থেকে লেখক যা ইচ্ছা তাই লিখতে পারেন। তবে তিনি তার যেকোনো লেখনির ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন যাতে করে শালীনতা বজায় রাখা যায় এবং অন্যের ধর্মীয় অনুভূতি, মূল্যবোধ ও অধিকারের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করা যায়। - মুহাম্মাদ আল-আমিন খান, লেখক ও ওয়েব এডমিন, Bangla Articles

Post a Comment

0Comments
Post a Comment (0)
To Top