গর্ভকালীন সময় হার্নিয়া হলে
বাচ্চার কি ধরনের ক্ষতি হয়?
গর্ভকালীন সময়ে হার্নিয়া হওয়া মায়ের জন্য একটি
চিন্তার বিষয় হতে পারে, তবে এটি সাধারণত
গর্ভস্থ শিশুর জন্য বিপদজনক নয়, যদি না এটি গুরুতর
কোনো জটিলতা সৃষ্টি করে। হার্নিয়া হলো এমন একটি অবস্থায় যখন অন্ত্র বা অন্যান্য
অঙ্গগুলো তাদের স্বাভাবিক অবস্থান থেকে সরে গিয়ে শারীরিক প্রাচীরের মাধ্যমে বেরিয়ে
আসে। গর্ভাবস্থায়, এটি বেশ কিছু কারণে
ঘটতে পারে, বিশেষত যদি মায়ের
পেটের অংশে অতিরিক্ত চাপ পড়ে।
গর্ভকালীন হার্নিয়া কীভাবে হয়?
গর্ভাবস্থায় মায়ের পেটের মধ্যে যে চাপ তৈরি হয়, তা হার্নিয়া সৃষ্টি করতে পারে, বিশেষ করে পেটে। এই চাপের ফলে মায়ের পেটের মধ্যে অন্ত্র বা অন্যান্য
অঙ্গ (যেমন ইউটেরাস, মূত্রথলি, ছোট অন্ত্র) সরে গিয়ে
পেটের বাইরের অংশে বেরিয়ে আসতে পারে।
গর্ভাবস্থায় সাধারণত তিনটি ধরনের হার্নিয়া দেখা
যেতে পারে:
- ইনগুইনাল হার্নিয়া (Inguinal Hernia): এটি পেটের নিচে, মোর্বিড অঞ্চলে (যেখানে উরুসন্ধি) হয়ে থাকে।
এই ধরনের হার্নিয়া সাধারণত পুরুষদের মধ্যে বেশি দেখা যায়, তবে মহিলাদের মধ্যে গর্ভাবস্থায় এটি হতে
পারে।
- উম্বিলিকাল হার্নিয়া (Umbilical Hernia): এটি বাচ্চার
জন্মের পর নাভি অঞ্চলে বা পেটের অন্যান্য অংশে হতে পারে, কিন্তু গর্ভাবস্থায়ও কিছুটা বাড়তি চাপের
কারণে এটি হতে পারে।
- এপিগাস্ট্রিক হার্নিয়া (Epigastric Hernia): এটি পেটের উপরের
অংশে ঘটে, যেখানে
খাদ্যনালির এবং পেটের শিরা আসে।
গর্ভাবস্থায় হার্নিয়ার প্রভাব
শিশুর ওপর:
গর্ভকালীন হার্নিয়া সাধারণত শিশুর জন্য সরাসরি
ক্ষতিকর নয়, তবে কিছু পরিস্থিতিতে
এটি জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে।
যদি হার্নিয়া গুরুতর হয়ে যায়: হার্নিয়ার কনটেন্ট
স্ট্র্যাংগুলেটেড হয়ে গেলে (অর্থাৎ, হার্নিয়া জায়গায় আটকে
গেলে), তখন তা গর্ভাবস্থায় মা এবং
শিশুর জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। এটি শিশুর রক্ত সরবরাহ বা গর্ভাশয়ে শারীরিক চাপ
সৃষ্টি করতে পারে, যা একটি জরুরি
চিকিৎসার প্রয়োজন সৃষ্টি করে।
অতিরিক্ত চাপের কারণে মায়ের
অস্বস্তি: গর্ভাবস্থায় মায়ের পেটে
অতিরিক্ত চাপ থাকা হার্নিয়ার কারণে তার নাভি বা পেটের কোনো অংশে সমস্যা সৃষ্টি
করতে পারে, যার ফলে মায়ের জন্য
যন্ত্রণা বা অস্বস্তি হতে পারে, যা তার সামগ্রিক
স্বাস্থ্যে প্রভাব ফেলতে পারে।
গর্ভাবস্থায় হার্নিয়া নিয়ে
শল্য চিকিৎসা (Surgery): গর্ভাবস্থায় যদি হার্নিয়া শল্য চিকিৎসার (অথবা অপারেশন)
প্রয়োজন হয়, তবে এটি শিশুর জন্য
বিপজ্জনক হতে পারে। তবে শল্য চিকিৎসা করা হলে চিকিৎসকরা বিশেষত যত্নশীলভাবে
গর্ভবতী মা এবং শিশুর স্বাস্থ্যের বিষয়টি দেখবেন।
গর্ভাবস্থায় হার্নিয়া হলে
শিশুর শারীরিক ক্ষতি হতে পারে কিনা?
গর্ভাবস্থায় হার্নিয়া সরাসরি শিশুর ক্ষতি না করলেও, যদি হার্নিয়া গুরুতর হয় এবং জটিলতার সৃষ্টি করে, তবে মায়ের শারীরিক অবস্থা এবং তার মধ্যে চাপ
তৈরি হওয়া শিশুর বিকাশের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। তাছাড়া, মায়ের শারীরিক অস্বস্তি বা চাপ শিশুর শারীরিক
অবস্থা নিয়েও প্রভাব ফেলতে পারে, কিন্তু এটি খুবই
বিরল।
কেন হার্নিয়া গর্ভাবস্থায় হতে
পারে?
গর্ভাবস্থায় কয়েকটি কারণের জন্য হার্নিয়া হতে
পারে:
- গর্ভাবস্থায় পেটের পেশী দুর্বল হয়ে পড়তে
পারে।
- মায়ের পেটের আকার বেড়ে যাওয়ার কারণে অতিরিক্ত
চাপ তৈরি হতে পারে।
- গর্ভাবস্থার শেষে অতিরিক্ত ওজন এবং হরমোনের
পরিবর্তনও হার্নিয়া সৃষ্টি করতে পারে।
গর্ভাবস্থায় হার্নিয়ার
চিকিৎসা:
- সাধারণত, গর্ভাবস্থায় যদি
হার্নিয়ার লক্ষণ থাকে, তবে ধীরে ধীরে
চিকিৎসা নেওয়া হয়। মায়ের শারীরিক অবস্থা এবং হার্নিয়ার
পরিস্থিতি অনুযায়ী চিকিৎসকরা পরামর্শ দেবেন।
- যদি হার্নিয়া শল্য চিকিৎসার মাধ্যমে চিকিৎসা প্রয়োজন
হয়, তবে এটি
গর্ভাবস্থার শেষ দিকে করা হতে পারে, যাতে তা গর্ভস্থ
শিশুর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ না হয়।
উপসংহার: গর্ভাবস্থায় হার্নিয়া হলে সরাসরি শিশুর ওপর
ক্ষতিকর প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা কম। তবে যদি হার্নিয়া গুরুতর হয় বা কোনো জটিলতা
সৃষ্টি করে, তখন তা মায়ের
স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে এবং পরোক্ষভাবে শিশুর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে
পারে। গর্ভাবস্থায় হার্নিয়ার লক্ষণ দেখা দিলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত
এবং সঠিক চিকিৎসা করা উচিত।
সার্চ কী: গর্ভাবস্থায় হার্নিয়া কি? হার্নিয়া কত প্রকার ও কি কি? হার্নিয়া কিভাবে নির্ণয় করা হয়? Umbilical
hernia কেন হয়? হার্নিয়া থেকে
মুক্তির উপায়, সিজারের পর হার্নিয়া
কেন হয়, পুরুষের হার্নিয়া
রোগ কেন হয়, হার্নিয়া ছবি, হার্নিয়া অপারেশন খরচ,অন্ডকোষ হার্নিয়া ছবি, অন্ডকোষে হার্নিয়া, অন্ডকোষে হার্নিয়ার
লক্ষণ
ঘোষণা: এই ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সকল লেখনি লেখক ও ওয়েব এডমিন মুহাম্মাদ আল-আমিন খান কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। Bangla Articles এর কোনো লেখনি থেকে সম্পূর্ণ অথবা আংশিক কপি করে সোশ্যাল মিডিয়া ও অন্য কোনো ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা যাবে না। কোনো লেখনি ভালো লাগলে ও প্রয়োজনীয় মনে হলে এই ওয়েবসাইট থেকেই তা পড়তে পারেন অথবা ওয়েব লিংক শেয়ার করতে পারেন। গুগল সার্চ থেকে দেখা গেছে যে- বহু লেখনি কতিপয় ব্যক্তি নিজের নামে চালিয়ে দিয়েছেন, যা সম্পূর্ণরূপে কপিরাইট আইনের লঙ্ঘন। ভবিষ্যতে আবারও এমনটি হলে প্রথমত গুগলের কাছে রিপোর্ট করা হবে ও দ্বিতীয়ত তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই কপিরাইট আইনের আওতায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একই সাথে সকলের জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি যে- Bangla Articles এ প্রকাশিত কোনো লেখনি আপনার ভালো না-ও লাগতে পারে, প্রয়োজনে আপনি এর সমালোচনা কমেন্টের মাধ্যমে করতে পারেন। বাক স্বাধীনতা, চিন্তার বহিঃপ্রকাশ করার অধিকার ও লেখালেখি করার অভ্যাসের জায়গা থেকে লেখক যা ইচ্ছা তাই লিখতে পারেন। তবে তিনি তার যেকোনো লেখনির ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন যাতে করে শালীনতা বজায় রাখা যায় এবং অন্যের ধর্মীয় অনুভূতি, মূল্যবোধ ও অধিকারের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করা যায়। - মুহাম্মাদ আল-আমিন খান, লেখক ও ওয়েব এডমিন, Bangla Articles