কোন খাবার খেলে দ্রুত
রক্ত বাড়ে? রক্ত স্বল্পতা দূর করতে উপকারী ১১টি খাবার
শরীরে রক্তের পরিমাণ
কমে গেলে (অ্যানিমিয়া হলে), ক্লান্তি, দুর্বলতা, মাথা ঘোরা, শ্বাসকষ্ট, রঙ
ফ্যাকাসে হয়ে যাওয়া ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দিতে পারে। রক্ত তৈরিতে প্রধান উপাদান হলো
হিমোগ্লোবিন, যার জন্য আয়রন, ফলিক
অ্যাসিড, ভিটামিন B12 ও ভিটামিন C
অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিচে এমন কিছু খাবারের বিস্তারিত আলোচনা
দেওয়া হলো যা দ্রুত রক্ত বাড়াতে সহায়ক।
রক্ত বাড়ানোর জন্য
উপযোগী ১১টি প্রধান খাবার
১. লাল মাংস
(গরু/খাসি/ভেড়া)
- বিবরণ: লাল মাংসে হেম আয়রন থাকে,
যা শরীরে সহজে শোষিত হয়। এটি হিমোগ্লোবিন ও রেড ব্লাড সেল
তৈরিতে সরাসরি কাজ করে।
- কীভাবে খাওয়া উচিত: সপ্তাহে
২-৩ দিন ১০০–১৫০ গ্রাম করে সিদ্ধ বা গ্রিল করে খাওয়া ভালো।
২. যকৃত (লিভার)
- বিবরণ: গরু বা মুরগির যকৃত হলো
আয়রন, ভিটামিন A, ভিটামিন B12
ও ফলিক অ্যাসিডের উৎস। যাদের রক্ত কম, তাদের
জন্য এটি একটি ‘সুপারফুড’।
- কীভাবে খাওয়া উচিত: সপ্তাহে
১-২ বার রান্না করে খেতে পারেন। অতিরিক্ত খাওয়া ক্ষতিকর হতে পারে (ভিটামিন A
বিষক্রিয়ার ঝুঁকি)।
৩. পালং শাক ও
অন্যান্য গাঢ় সবুজ শাকসবজি
- বিবরণ: পালং, কলমি, লালশাক, ঢেঁড়স
ইত্যাদি শাকসবজিতে আয়রন, ভিটামিন C ও ফলেট থাকে যা রক্ত তৈরিতে সহায়ক।
- কীভাবে খাওয়া উচিত: প্রতিদিন
১ বাটি শাক রান্না করে বা ভাপ দিয়ে খেতে পারেন।
৪. বীটরুট ও আপেল
- বিবরণ: বীটরুটে আয়রন, ফাইবার, ভিটামিন C এবং
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। আপেল হালকা আয়রনের উৎস হলেও এর মধ্যে থাকা
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিমোগ্লোবিন তৈরিতে সাহায্য করে।
- কীভাবে খাওয়া উচিত: বীটরুট
কাঁচা বা জুস করে এবং আপেল প্রতিদিন একট করে খাওয়া ভালো।
৫. ডিম
- বিবরণ: ডিমে থাকে উচ্চমাত্রার
প্রোটিন, আয়রন এবং ভিটামিন B12, যা
রক্ত তৈরির জন্য অপরিহার্য।
- কীভাবে খাওয়া উচিত: প্রতিদিন
১-২টি সিদ্ধ বা পোচ খাওয়া নিরাপদ।
৬. বাদাম ও বীজ
- বিবরণ: কাজুবাদাম, চিনাবাদাম, তিল, সূর্যমুখী
বীজ ইত্যাদিতে থাকে নন-হেম আয়রন ও ওমেগা-৩, যা রক্ত
তৈরিতে সহায়ক এবং হৃদযন্ত্রের জন্যও ভালো।
- কীভাবে খাওয়া উচিত: প্রতিদিন
২-৩ টেবিল চামচ মিশ্র বাদাম খেতে পারেন।
৭. ডাল ও শিমজাতীয়
খাবার
- বিবরণ: মসুর, মুগ, কালো ডাল, মটরশুঁটি—
সবই আয়রনের চমৎকার উৎস। এরা নিরামিষভোজীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ
রক্তবর্ধক উপাদান।
- কীভাবে খাওয়া উচিত: প্রতিদিন
অন্তত ১ বাটি ডাল খাওয়ার চেষ্টা করুন।
৮. ভিটামিন C সমৃদ্ধ ফল
- বিবরণ: কমলা, মাল্টা, লেবু, আমলকি
ইত্যাদিতে প্রচুর ভিটামিন C থাকে, যা আয়রনের শোষণ বাড়ায়। শুধু আয়রন খেলেই হবে না—সঠিক শোষণের জন্য
ভিটামিন C আবশ্যক।
- কীভাবে খাওয়া উচিত: প্রতিদিন
সকালে বা দুপুরে আয়রনসমৃদ্ধ খাবারের সাথে খাওয়া সবচেয়ে ভালো।
৯. মাছ ও সামুদ্রিক
খাবার
- বিবরণ: সারডিন, টুনা, রুই, কাতলা,
ইলিশ— এসব মাছে হেম আয়রন, ওমেগা-৩ এবং
ভিটামিন B12 থাকে।
- কীভাবে খাওয়া উচিত: সপ্তাহে
৩-৪ দিন মাছ খাওয়া উচিত।
১০. আয়রন-ফর্টিফায়েড
সিরিয়াল ও শস্যদানা
- বিবরণ: বাজারে পাওয়া আয়রন সমৃদ্ধ
দানাশস্য, কর্নফ্লেক্স, ওটস
ইত্যাদি হিমোগ্লোবিন বাড়াতে সহায়ক।
- কীভাবে খাওয়া উচিত: সকালের
নাস্তায় দুধসহ খাওয়া যায়।
১১. দুধ ও দুগ্ধজাত
খাবার (মিতভাবে)
- বিবরণ: দুধে আয়রনের পরিমাণ কম
থাকলেও এতে থাকা ভিটামিন B12 রক্ত তৈরির জন্য দরকারি।
তবে বেশি দুধ খাওয়া আয়রনের শোষণে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।
- কীভাবে খাওয়া উচিত: প্রতিদিন
১ গ্লাস দুধ বা দই, তবে মূল আয়রন উৎসের সাথে একসাথে না
খাওয়াই ভালো।
বাড়তি কিছু পরামর্শ:
- চা/কফি খাবেন না আয়রন-সমৃদ্ধ খাবারের সাথে – এতে
আয়রনের শোষণ ব্যাহত হয়।
- ভিটামিন C ও আয়রন
একসাথে খান – শাকের সাথে লেবুর রস বা ফল খেলে আয়রনের শোষণ বাড়ে।
- অতিরিক্ত আয়রন সাপ্লিমেন্ট নিজের ইচ্ছায়
খাবেন না – চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া নয়।
- প্রচুর পানি খান – রক্তের
তরলতা বজায় রাখতে সহায়তা করে।
সার্চ কী: রক্ত বাড়ানোর খাবার, শরীরে রক্ত বাড়ানোর উপায়, অ্যানিমিয়া
নিরাময়ের খাবার, হিমোগ্লোবিন বাড়ানোর খাবার, আয়রনযুক্ত খাবার, হিমোগ্লোবিন কম হলে কি খাওয়া উচিত,
রক্তস্বল্পতা কমানোর ঘরোয়া উপায়, কোন খাবারে
রক্ত বাড়ে, রক্ত বাড়াতে কি খাবেন, শরীরে
রক্ত বাড়াতে কি খাবেন, রক্ত স্বল্পতা দুর করার খাবার,
হিমোগ্লোবিন বাড়ানোর প্রাকৃতিক উপায়, পালং
শাক রক্ত, আপেল রক্ত বাড়ায়, বীটরুট
খাওয়ার উপকারিতা, শরীরে আয়রন বাড়ানোর উপায়, রক্তের ঘাটতি পূরণ, অ্যানিমিয়া প্রতিরোধের উপায়,
B12 সমৃদ্ধ খাবার, ফোলেট ও আয়রন যুক্ত খাবার।
ঘোষণা: এই ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সকল লেখনি সম্পাদক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। Bangla Articles এর কোনো লেখনি থেকে সম্পূর্ণ অথবা আংশিক কপি করে সোশ্যাল মিডিয়া ও অন্য কোনো ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা যাবে না। কোনো লেখনি ভালো লাগলে ও প্রয়োজনীয় মনে হলে এই ওয়েবসাইট থেকেই তা পড়তে পারেন অথবা ওয়েব লিংক শেয়ার করতে পারেন। গুগল সার্চ থেকে দেখা গেছে যে- বহু লেখনি কতিপয় ব্যক্তি নিজের নামে চালিয়ে দিয়েছেন, যা সম্পূর্ণরূপে কপিরাইট আইনের লঙ্ঘন। ভবিষ্যতে আবারও এমনটি হলে প্রথমত গুগলের কাছে রিপোর্ট করা হবে ও দ্বিতীয়ত তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই কপিরাইট আইনের আওতায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একই সাথে সকলের জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি যে- Bangla Articles এ প্রকাশিত কোনো লেখনি আপনার ভালো না-ও লাগতে পারে, প্রয়োজনে আপনি এর সমালোচনা কমেন্টের মাধ্যমে করতে পারেন। বাক স্বাধীনতা, চিন্তার বহিঃপ্রকাশ করার অধিকার ও লেখালেখি করার অভ্যাসের জায়গা থেকে লেখক ও সম্পাদক যা ইচ্ছা তাই লিখতে পারেন। তবে তিনি তার যেকোনো লেখনির ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন যাতে করে শালীনতা বজায় রাখা যায় এবং অন্যের ধর্মীয় অনুভূতি, মূল্যবোধ ও অধিকারের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করা যায়। - সম্পাদক, Bangla Articles