মাথার তালুতে ব্যথার
কারণ ও তাৎক্ষণিক মাথা ব্যথা কমানোর কার্যকর উপায়
১. মাথার তালুতে
ব্যথার কারণ
মাথার তালু হলো মাথার
সামনের পাশের অংশ যেখানে দুই পাশে কান ও লালাগোলা সংলগ্ন স্থান। এখানে ব্যথা
বিভিন্ন কারণে হতে পারে, যেমন:
- টেনশন হেডেক (চাপজনিত মাথা ব্যথা): মানসিক চাপ, ক্লান্তি,
ঘুমের অভাব, চোখের সমস্যা ইত্যাদি কারণে
মাথার তালুতে টান অনুভূত হয়।
- মাইগ্রেন: মাইগ্রেনের সময় মাথার
তালু ও আশেপাশে তীব্র ধাক্কাধাক্কি অনুভূত হতে পারে।
- মাংসপেশীর টান: দীর্ঘ সময় কম্পিউটার
বা মোবাইলে কাজ করার ফলে মাথার পেশি শক্ত ও টান ধরে ব্যথা হতে পারে।
- সাইনাস সমস্যা: সাইনাসে জমে থাকা চাপের
কারণে মাথার সামনের অংশ বা তালুতে ব্যথা অনুভূত হতে পারে।
- নিউরালজিয়া: মস্তিষ্কের নির্দিষ্ট
স্নায়ু আক্রান্ত হলে তীব্র যন্ত্রণা বা শিরশিরানি অনুভব হতে পারে।
- রক্তচাপের সমস্যা: উচ্চ রক্তচাপ মাথা
ব্যথার কারণ হতে পারে।
- ডিহাইড্রেশন: শরীরে পানি কমে গেলে
মাথা ব্যথা শুরু হতে পারে।
২. মাথার তালুতে
ব্যথার লক্ষণ
- মাথার সামনে বা পাশে স্পষ্ট ব্যথা বা চাপ অনুভূতি
- মাথার পেশিতে টান বা আঁকড়ে ধরা
- চোখ ও কপালে চাপ অনুভূত হওয়া
- গলায় পেশি শক্ত হয়ে যাওয়া
- মাঝে মাঝে মাথা ঘোরানো বা বমির অনুভূতি
- কিছু ক্ষেত্রে দৃষ্টি ঝাপসা হওয়া বা আলোর প্রতি
সংবেদনশীলতা
৩. তাৎক্ষণিক মাথা
ব্যথা কমানোর উপায়
(ক) ঠাণ্ডা বা
গরম সেঁক
- ঠাণ্ডা সেঁক: মাথার তালুতে বরফ
মোড়ানো কাপড় ১০-১৫ মিনিট দিয়ে দিতে পারেন। এটি রক্তনালীর সংকোচন ঘটিয়ে
ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
- গরম সেঁক: কিছু সময় মাথার পেশি
শিথিল করতে গরম সেঁক দিলে অনেক ক্ষেত্রে আরাম পাওয়া যায়। তবে ঠাণ্ডা সেঁকের
চেয়ে গরম সেঁক মাংসপেশীর টানের জন্য বেশি উপকারী।
(খ) হালকা
ম্যাসাজ
- তালু, কপাল এবং গলার পেশিতে হালকা ও
বৃত্তাকার ম্যাসাজ করুন। এতে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায় এবং পেশি শিথিল হয়।
(গ) বিশ্রাম ও
অন্ধকার পরিবেশ
- মাথাব্যথা হলে আলো ও শব্দ কমানোর জন্য অন্ধকার ও শান্ত
ঘরে বিশ্রাম নিন। চোখ বন্ধ করে গভীর শ্বাস নিন।
(ঘ) পর্যাপ্ত
পানি পান
- ডিহাইড্রেশন মাথা ব্যথার বড় কারণ। দিনে অন্তত ৮-১০
গ্লাস পানি পান করুন।
(ঙ) ক্যাফেইন
সঠিক মাত্রায় গ্রহণ
- মৃদু ক্যাফেইন (কফি, চা) মাথাব্যথা কমাতে
সাহায্য করে, তবে অতিরিক্ত গ্রহণ এড়িয়ে চলুন।
(চ) ব্যথানাশক
ওষুধ
- প্যারাসিটামল, আইবুপ্রোফেন জাতীয় সাধারণ ব্যথানাশক
ওষুধ প্রয়োজনে ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া নিয়মিত ও
দীর্ঘমেয়াদি ব্যবহার এড়াতে হবে।
(ছ) ঘুমের
নিয়ম মেনে চলুন
- পর্যাপ্ত ও নিয়মিত ঘুম রাখুন। ঘুমের অভাব মাথাব্যথার
অন্যতম কারণ।
(জ) মানসিক চাপ
কমানো
- স্ট্রেস কমানোর জন্য মেডিটেশন, যোগব্যায়াম
ও শিথিলকরন পদ্ধতি অনুসরণ করুন।
(ঝ) চোখের
স্বাস্থ্য রক্ষা
- দীর্ঘক্ষণ স্ক্রীনের দিকে না তাকিয়ে মাঝে
মাঝে চোখের বিশ্রাম দিন।
(ঞ) ধূমপান ও
অ্যালকোহল এড়িয়ে চলুন
- এগুলো মাথাব্যথা বাড়াতে পারে।
৪. কখন ডাক্তারের
পরামর্শ নিবেন?
- ব্যথা তীব্র ও দীর্ঘস্থায়ী হলে
- মাথাব্যথার সঙ্গে জ্বর, বমি,
চक्कर, দৃষ্টি ঝাপসা বা কথা বলার অসুবিধা
দেখা দিলে
- মাথাব্যথার সঙ্গে হাত-পা দুর্বল হওয়া
- মাথাব্যথার সঙ্গে হঠাৎ জোরে মাথা ঘোরা বা
অজ্ঞান হওয়া
- ব্যথা নিয়ন্ত্রণের বাইরে গেলে
উপসংহার: মাথার তালুতে ব্যথা হওয়া খুবই
সাধারণ, যা অনেক সময় তাড়াতাড়ি বাড়তে পারে বা দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। সঠিক
পরিচর্যা ও জীবনযাত্রার পরিবর্তনের মাধ্যমে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ব্যথা নিয়ন্ত্রণ
করা সম্ভব। উপরোক্ত ঘরোয়া পদ্ধতি প্রয়োগ করে তাৎক্ষণিক আরাম পাওয়া যায়, তবে গুরুতর উপসর্গ থাকলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
সার্চ কী: মাথার তালুতে ব্যথা, মাথার তালুতে ব্যথার কারণ, মাথা ব্যথা
কমানোর উপায়, টেম্পোরাল হেডেক, মাথাব্যথার
ঘরোয়া চিকিৎসা, মাথা ব্যথা জন্য দ্রুত উপশম, মাথার পেশির ব্যথা, মাথাব্যথা কিভাবে কমাবেন,
মাথার তালুতে তীব্র ব্যথা, মাথা ব্যথা ও মাথা
ঘোরা, মাথার তালুতে শিরশিরানি, মাথা
ব্যথা ভালো করার উপায়, মাথা ব্যথার ওষুধ, মাথার তালুতে ব্যথার লক্ষণ, ঘরোয়া উপায় মাথাব্যথা
কমানোর, মাথাব্যথা প্রতিরোধ
ঘোষণা: এই ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সকল লেখনি সম্পাদক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। Bangla Articles এর কোনো লেখনি থেকে সম্পূর্ণ অথবা আংশিক কপি করে সোশ্যাল মিডিয়া ও অন্য কোনো ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা যাবে না। কোনো লেখনি ভালো লাগলে ও প্রয়োজনীয় মনে হলে এই ওয়েবসাইট থেকেই তা পড়তে পারেন অথবা ওয়েব লিংক শেয়ার করতে পারেন। গুগল সার্চ থেকে দেখা গেছে যে- বহু লেখনি কতিপয় ব্যক্তি নিজের নামে চালিয়ে দিয়েছেন, যা সম্পূর্ণরূপে কপিরাইট আইনের লঙ্ঘন। ভবিষ্যতে আবারও এমনটি হলে প্রথমত গুগলের কাছে রিপোর্ট করা হবে ও দ্বিতীয়ত তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই কপিরাইট আইনের আওতায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একই সাথে সকলের জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি যে- Bangla Articles এ প্রকাশিত কোনো লেখনি আপনার ভালো না-ও লাগতে পারে, প্রয়োজনে আপনি এর সমালোচনা কমেন্টের মাধ্যমে করতে পারেন। বাক স্বাধীনতা, চিন্তার বহিঃপ্রকাশ করার অধিকার ও লেখালেখি করার অভ্যাসের জায়গা থেকে লেখক ও সম্পাদক যা ইচ্ছা তাই লিখতে পারেন। তবে তিনি তার যেকোনো লেখনির ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন যাতে করে শালীনতা বজায় রাখা যায় এবং অন্যের ধর্মীয় অনুভূতি, মূল্যবোধ ও অধিকারের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করা যায়। - সম্পাদক, Bangla Articles