আলুম (ফিটকিরি) দিয়ে
ব্রণ দূর করার সম্পূর্ণ গাইড: পদ্ধতি, উপকারিতা ও সতর্কতা
আলুম কি?
আলুম, যা ফিটকিরি
নামেও পরিচিত, হল এক প্রকার খনিজ লবণ, যার
রসায়ন নাম হলো পটাশিয়াম অ্যালুমিনিয়াম সালফেট। এটি প্রাকৃতিক ভাবে খনিজের মধ্যে
পাওয়া যায় এবং প্রাচীনকাল থেকে বিভিন্ন ত্বকের সমস্যার চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
আলুম অ্যান্টিসেপটিক, অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও ফ্লেমিংগ
রোধকারী বৈশিষ্ট্যের জন্য পরিচিত। তাই এটি ব্রণ, ফুসকুড়ি ও
অন্যান্য ত্বকের প্রদাহ দূর করতে কার্যকর।
কেন আলুম ব্রণের জন্য
কার্যকর?
১. অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল
গুণ: আলুম ত্বকে থাকা ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে, যা ব্রণের প্রধান কারণ। ব্রণ
সাধারণত ত্বকের ছিদ্র বন্ধ হয়ে গেলে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের কারণে হয়।
২. অ্যান্টিসেপটিক
প্রভাব: আলুম সংক্রমণ রোধ করে ত্বককে পরিষ্কার রাখে।
৩. ত্বক শুষ্ক ও
টানটান করে: অতিরিক্ত তেল এবং ময়েশ্চার কমায়, যা ব্রণ কমাতে সাহায্য করে।
৪. প্রদাহ কমায়:
ব্রণের কারণে যেকোনো লালচে ভাব ও ফোলাভাব কমায়।
৫. ত্বকের রং
উজ্জ্বল করে: নিয়মিত ব্যবহারে ত্বক পরিষ্কার ও কোমল হয়।
আলুম দিয়ে ব্রণ দূর
করার পদ্ধতি
১. আলুম পেস্ট
বানিয়ে ব্যবহার
উপকরণ:
- আলুম পাউডার বা স্ফটিক (ফিটকিরি)
- গোলাপজল বা সাধারণ পানি
পদ্ধতি:
- প্রথমে এক চামচ আলুম পাউডার বা গুঁড়া করা স্ফটিক নিন।
- এতে ১-২ চামচ গোলাপজল বা পানি মিশিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি
করুন।
- ব্রণযুক্ত স্থানে এই পেস্ট হালকাভাবে মাখুন, বিশেষ
করে ব্রণের জায়গায়।
- ১৫-২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন।
- সপ্তাহে ২-৩ বার এই পদ্ধতি অনুসরণ করুন।
ফলাফল: ব্রণের প্রদাহ কমে
যাবে, ত্বক সুস্থ ও পরিষ্কার হবে।
২. আলুম স্ফটিক দিয়ে
ত্বক মসৃণ করা
উপকরণ:
- ছোট আলুম স্ফটিক
- তুলো
পদ্ধতি:
- আলুম স্ফটিকটি পানি দিয়ে ভিজিয়ে তুলোয় লাগান।
- ব্রণযুক্ত জায়গায় হালকাভাবে মুছুন।
- প্রতিদিন রাতে এই কাজটি করলে ত্বক টানটান ও ব্রণ মুক্ত
থাকবে।
৩. আলুম টনিক হিসেবে
ব্যবহার
- এক গ্লাস পানি বা গোলাপজলে সামান্য আলুম গুঁড়া মিশিয়ে
প্রতিদিন সকালে বা রাতে ত্বকে স্প্রে বা মুছে নিন।
- এটি ত্বকের তৈলাক্ততা কমাবে ও ব্রণ দূর করবে।
আলুম ব্যবহারের সময়
সতর্কতা ও পরামর্শ
১. অতিরিক্ত
ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন: আলুম ত্বক শুষ্ক করে দিতে পারে। অতিরিক্ত ব্যবহারে
ত্বকে ফাটল বা লালচে ভাব হতে পারে।
২. প্রথম ব্যবহারে
এলার্জি পরীক্ষা করুন: হাতের পেছনে সামান্য পরিমাণে আলুম পেস্ট লাগিয়ে ২৪
ঘণ্টা রাখুন। জ্বালা বা লালচে ভাব দেখা দিলে ব্যবহার বন্ধ করুন।
৩. ক্ষতস্থান ও
সংবেদনশীল ত্বকে ব্যবহার করবেন না: আলুম ক্ষতস্থান বা ফাটলযুক্ত ত্বকে লাগালে
জ্বালা হতে পারে।
৪. চোখের কাছে
ব্যবহার এড়িয়ে চলুন।
৫. বাচ্চাদের
ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করুন।
আলুমের সাথে
ব্যবহারের জন্য ঘরোয়া কিছু টিপস
- আলুম + মধু: আলুম পেস্টে একটু মধু
মিশিয়ে ব্রণযুক্ত স্থানে লাগালে ত্বক নরম ও প্রদাহ কমে।
- আলুম + এলোভেরা জেল: এলোভেরা জেল
দিয়ে আলুমের পেস্ট তৈরি করলে ত্বক শান্ত হয় এবং দ্রুত আরাম মেলে।
- আলুম + লেবুর রস: ব্রণের দাগ কমাতে আলুম
পেস্টে একটু লেবুর রস মিশিয়ে ব্যবহার করা যায়, তবে সংবেদনশীল ত্বকে
সাবধান।
আলুম ব্যবহারের
অন্যান্য উপকারিতা
- ব্রণের পাশাপাশি এটি দেহের দুর্গন্ধ কমাতে সাহায্য
করে।
- দন্তমঞ্জনে ব্যবহার করলে দাঁতের পাকা দূর করে।
- ত্বকের ছোটোখাটো কাটা ও পিঁপড়া কামড় থেকে আরাম দেয়।
শেষ কথা
আলুম (ফিটকিরি) একটি
সহজলভ্য ও কার্যকর প্রাকৃতিক উপাদান, যা সঠিক ব্যবহার করলে ব্রণ ও ত্বকের প্রদাহ
কমাতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে। তবে নিয়মিত ও সাবধানতার সাথে ব্যবহার করতে
হবে। ত্বকে সমস্যা বেড়ে গেলে বা এলার্জি হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
সার্চ কী: আলুম দিয়ে ব্রণ দূর করা, ফিটকিরি ব্রণের জন্য, আলুম ব্যবহার
পদ্ধতি, আলুম পেস্ট ব্রণ, ব্রণ কমানোর
ঘরোয়া উপায়, ব্রণের জন্য আলুমের উপকারিতা, আলুম ত্বকের জন্য, ফিটকিরি ত্বক পরিচর্যা, ব্রণ ও ফুসকুড়িতে আলুম, ব্রণের প্রাকৃতিক চিকিৎসা,
ত্বকের ব্রণ দূর করার সহজ উপায়, আলুম ব্যবহার
সতর্কতা, আলুম দিয়ে ব্রণ কমানো
ঘোষণা: এই ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সকল লেখনি সম্পাদক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। Bangla Articles এর কোনো লেখনি থেকে সম্পূর্ণ অথবা আংশিক কপি করে সোশ্যাল মিডিয়া ও অন্য কোনো ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা যাবে না। কোনো লেখনি ভালো লাগলে ও প্রয়োজনীয় মনে হলে এই ওয়েবসাইট থেকেই তা পড়তে পারেন অথবা ওয়েব লিংক শেয়ার করতে পারেন। গুগল সার্চ থেকে দেখা গেছে যে- বহু লেখনি কতিপয় ব্যক্তি নিজের নামে চালিয়ে দিয়েছেন, যা সম্পূর্ণরূপে কপিরাইট আইনের লঙ্ঘন। ভবিষ্যতে আবারও এমনটি হলে প্রথমত গুগলের কাছে রিপোর্ট করা হবে ও দ্বিতীয়ত তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই কপিরাইট আইনের আওতায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একই সাথে সকলের জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি যে- Bangla Articles এ প্রকাশিত কোনো লেখনি আপনার ভালো না-ও লাগতে পারে, প্রয়োজনে আপনি এর সমালোচনা কমেন্টের মাধ্যমে করতে পারেন। বাক স্বাধীনতা, চিন্তার বহিঃপ্রকাশ করার অধিকার ও লেখালেখি করার অভ্যাসের জায়গা থেকে লেখক ও সম্পাদক যা ইচ্ছা তাই লিখতে পারেন। তবে তিনি তার যেকোনো লেখনির ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন যাতে করে শালীনতা বজায় রাখা যায় এবং অন্যের ধর্মীয় অনুভূতি, মূল্যবোধ ও অধিকারের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করা যায়। - সম্পাদক, Bangla Articles