ওয়ারেন্টস কী? প্রতিটি ওয়ারেন্টসে কী কী বিষয় উল্লেখ থাকে?
ওয়ারেন্টস (Warrants) হলো একটি ধরনের আর্থিক যন্ত্র বা সিকিউরিটি যা একটি
প্রতিষ্ঠানের দ্বারা জারি করা হয়, যার মাধ্যমে ধারককে
নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে একটি নির্দিষ্ট মূল্য (স্ট্রাইক প্রাইস) দিয়ে সেই
প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ক্রয় করার অধিকার প্রদান করা হয়। অর্থাৎ, একটি ওয়ারেন্ট ধারককে ভবিষ্যতে তার পছন্দসই সময়ে শেয়ার কেনার বা বিক্রির
সুযোগ দেয়, তবে এটি বাধ্যবাধকতা নয়। সাধারণত, ওয়ারেন্টস দীর্ঘমেয়াদী সিকিউরিটি হিসেবে থাকে এবং এটি একটি অতিরিক্ত
সুবিধা বা প্রেরণা হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
ওয়ারেন্টস মূলত দুটি প্রধান ধরনের হতে পারে:
- এক্সপিরি
ওয়ারেন্ট (Equity Warrants): শেয়ার কেনার অধিকার প্রদান করে।
- ডেবেঞ্চার বা
বন্ড ওয়ারেন্ট (Debenture or Bond Warrants): ঋণপত্র
বা বন্ডের সাথে সম্পর্কিত।
ওয়ারেন্টস সাধারণত একটি কোম্পানি তাদের শেয়ারহোল্ডার বা বিনিয়োগকারীদেরকে
প্রদান করে যদি তারা কোম্পানির শেয়ার থেকে অতিরিক্ত লাভ উপার্জন করতে চায়।
ওয়ারেন্টসের বিষয়বস্তু (What is Mentioned in a Warrant)
প্রতিটি ওয়ারেন্টে কিছু নির্দিষ্ট তথ্য উল্লেখ করা হয়, যা
ওয়ারেন্টধারীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এসব বিষয় সাধারণত নিচে বর্ণিত:
- ওয়ারেন্টের ধরন এবং শর্তাবলী:এটি ওয়ারেন্টের মূল বৈশিষ্ট্য হিসেবে কাজ করে। এখানে উল্লেখ থাকে যে, ওয়ারেন্ট ধারক শেয়ার কিনতে পারবে, কিনা এবং কিভাবে এটি কার্যকরী হবে।
- স্ট্রাইক প্রাইস (Strike Price):এটি হলো সেই নির্দিষ্ট মূল্য, যা ওয়ারেন্টধারীকে শেয়ার কেনার জন্য পরিশোধ করতে হবে। এটি পূর্বনির্ধারিত এবং সাধারণত বাজারমূল্যের চেয়ে কম হয়, ফলে এটি বিনিয়োগকারীর জন্য আকর্ষণীয় হতে পারে।
- মেয়াদ (Expiration Date):ওয়ারেন্টের একটি নির্দিষ্ট মেয়াদ থাকে। এই মেয়াদ পর্যন্ত ওয়ারেন্টধারী শেয়ার কিনতে পারবে। মেয়াদের পর, এটি আর কার্যকরী থাকে না এবং সাধারণত মেয়াদোত্তীর্ণ হয়।
- ওয়ারেন্ট সংখ্যা (Number of Warrants):এখানে উল্লেখ করা হয় যে, একটি নির্দিষ্ট ওয়ারেন্ট কত সংখ্যক শেয়ার কেনার অধিকার প্রদান করবে। সাধারণত একটি ওয়ারেন্টের মাধ্যমে এক বা একাধিক শেয়ার কেনা যেতে পারে।
- ওয়ারেন্টের রূপ (Form of Warrant):ওয়ারেন্ট সাধারণত দুটি রূপে আসে:
- শারীরিক (Physical): কাগজে
মুদ্রিত ওয়ারেন্ট।
- ডিম্যাট (Dematerialized): ইলেকট্রনিক
ফর্মে ওয়ারেন্ট।
- শেয়ার প্রদানকারী কোম্পানির নাম:ওয়ারেন্টে সেই কোম্পানির নাম উল্লেখ থাকে, যার শেয়ার কিনতে বা বিক্রির অধিকার দেওয়া হয়। এটি ধারককে সঠিক কোম্পানির শেয়ার সম্পর্কে নির্দেশনা প্রদান করে।
- ওয়ারেন্টের হোল্ডারের অধিকার:ওয়ারেন্টধারী সাধারণত শেয়ার ক্রয় করার অধিকার লাভ করেন, তবে কোম্পানির শেয়ার হোল্ডার হওয়ার অধিকার থাকে না যতক্ষণ না তিনি শেয়ারটি কিনে নেন। ওয়ারেন্ট ধারককে সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের মতো ভোট প্রদান বা লভ্যাংশ পাওয়ার অধিকার দেওয়া হয় না যতক্ষণ না শেয়ার কেনা না হয়।
- ওয়ারেন্টের ট্রেডিং শর্তাবলী:কখন এবং কোথায় ওয়ারেন্টগুলো বিক্রয় করা যাবে, তা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়। এটি বিনিয়োগকারীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, যাতে তারা বুঝতে পারে তারা ওয়ারেন্ট বিক্রি করতে পারবে কি না এবং এর জন্য কি প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে।
- রূপান্তরের শর্তাবলী (Conversion Terms):ওয়ারেন্ট ধারক যদি শেয়ার কিনতে চান, তবে কীভাবে এবং কতটুকু শেয়ার রূপান্তর করা যাবে, এটি নির্দেশ করে।
ওয়ারেন্টসের বৈশিষ্ট্য
- অনুমোদিত অধিকার: ওয়ারেন্ট
ধারক শেয়ার কিনতে পারেন, কিন্তু এটি একটি অধিকার,
বাধ্যবাধকতা নয়।
- বিশাল মুনাফা
উপার্জন: যদি শেয়ারের মূল্য স্ট্রাইক প্রাইসের চেয়ে বেশি হয়ে যায়,
তাহলে ধারক উপযুক্ত সময়ে শেয়ার কিনে মুনাফা অর্জন করতে পারেন।
- রক্ষণশীল ঝুঁকি: যেহেতু
এটি একটি অধিকার, তাই ওয়ারেন্টধারীকে শেয়ার কেনার জন্য
বাধ্য করা হয় না, তাই এর ঝুঁকি তুলনামূলকভাবে কম।
উপসংহার
ওয়ারেন্টস একটি আর্থিক সিকিউরিটি যা একটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ক্রয়ের অধিকার প্রদান করে এবং এটি বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি আকর্ষণীয় উপায় হতে পারে, বিশেষত যখন শেয়ারের মূল্য ভবিষ্যতে বৃদ্ধির সম্ভাবনা থাকে। তবে, ওয়ারেন্টসের মধ্যে উল্লেখিত বিষয়গুলির মাধ্যমে বিনিয়োগকারী তাদের ঝুঁকি এবং সুবিধা সম্পর্কে ধারণা লাভ করতে পারে, যা ভবিষ্যতে লাভজনক হতে পারে।
ঘোষণা: এই ওয়েবসাইটে (Bangla Articles) প্রকাশিত সকল লেখনি লেখক ও ওয়েব এডমিন মুহাম্মাদ আল-আমিন খান কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। Bangla Articles এর কোনো লেখনি থেকে সম্পূর্ণ অথবা আংশিক কপি করে সোশ্যাল মিডিয়া ও অন্য কোনো ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা যাবে না। কোনো লেখনি ভালো লাগলে ও প্রয়োজনীয় মনে হলে এই ওয়েবসাইট থেকেই তা পড়তে পারেন অথবা ওয়েব লিংক শেয়ার করতে পারেন। গুগল সার্চ থেকে দেখা গেছে যে- বহু লেখনি কতিপয় দুষ্কৃতিকারী নিজের নামে চালিয়ে দিয়েছেন, যা সম্পূর্ণরূপে কপিরাইট আইনের লঙ্ঘন। ভবিষ্যতে আবারও এমনটি হলে প্রথমত গুগলের কাছে রিপোর্ট করা হবে ও দ্বিতীয়ত তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই কপিরাইট আইনের আওতায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একই সাথে সকলের জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি যে- Bangla Articles এ প্রকাশিত কোনো লেখনি আপনার ভালো না-ও লাগতে পারে, প্রয়োজনে আপনি এর সমালোচনা কমেন্টের মাধ্যমে করতে পারেন। বাক স্বাধীনতা, চিন্তার বহিঃপ্রকাশ করার অধিকার ও লেখালেখি করার অভ্যাসের জায়গা থেকে লেখক যা ইচ্ছা তাই লিখতে পারেন। তবে তিনি তার যেকোনো লেখনির ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন যাতে করে শালীনতা বজায় রাখা যায় এবং অন্যের ধর্মীয় অনুভূতি, মূল্যবোধ ও অধিকারের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করা যায়। - মুহাম্মাদ আল-আমিন খান, লেখক ও ওয়েব এডমিন, Bangla Articles